সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হতে চলেছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার ভুচিচের শাসনের বিরুদ্ধে জনগণের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের প্রেক্ষাপটে এই বিক্ষোভকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। নভেম্বরের একটি দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত হওয়ার পর থেকেই দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে, যেখানে দুর্নীতিকে প্রধান কারণ হিসেবে দায়ী করা হচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট ভুচিচ এই বিক্ষোভের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তিনি বলেছেন, বিক্ষোভকারীরা যদি তাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চায়, তবে তাদের ‘তাকে হত্যা করতে হবে’। প্রেসিডেন্টের সমর্থকরা এরই মধ্যে রাজধানীর একটি পার্কে অবস্থান নিয়েছে এবং নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভ দমনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
বিক্ষোভকারীরা সম্প্রতি সংস্কার করা একটি রেলস্টেশনের ছাদ ধসে পড়ার ঘটনায় দুর্নীতির অভিযোগ এনে এর জবাবদিহিতা দাবি করছেন। তারা স্বচ্ছ প্রতিষ্ঠান ও আইনের শাসনের ভিত্তিতে দেশ পরিচালনারও আহ্বান জানাচ্ছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সার্বিয়ার এই পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। কারণ, দেশটি ইইউ সদস্যপদের জন্য আবেদন করেছে এবং তাদের গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের প্রতি অঙ্গীকার পরীক্ষা করা হচ্ছে। ইইউ কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন যে, সার্বিয়ার সরকার যদি বিক্ষোভকারীদের ওপর কোনো ধরনের সহিংসতা চালায়, তাহলে তা হবে ইইউ-এর নীতিমালার পরিপন্থী।
এই বিক্ষোভের কারণ হিসেবে অনেকে মনে করেন, ২০১৬ সাল থেকে ভুচিচের ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে রাজনৈতিক অঙ্গনে ভিন্নমত প্রকাশের সুযোগ কমে গেছে। তাছাড়া, সরকার গণমাধ্যমকেও নিয়ন্ত্রণ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, ভুচিচ সরকার দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিচ্ছে এবং এর ফলে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।
বিক্ষোভকারীরা বলছেন, তারা তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তাদের এই আন্দোলনে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ সমর্থন জানাচ্ছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সার্বিয়ার এই পরিস্থিতি ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোর জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হতে পারে, যেখানে সুশাসন ও জবাবদিহিতার দাবিতে আন্দোলন একটি বৈশ্বিক প্রবণতা।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান