যুক্তরাষ্ট্রের এক ফেডারেল বিচারক, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে অভিবাসীদের দ্রুত বিতাড়িত করার একটি সিদ্ধান্তের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছেন।
ভেনেজুয়েলার ‘ট্রেন দে আরাগুয়া’ নামক একটি গ্যাংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার অভিযোগে এই অভিবাসীদের বিতাড়িত করার কথা ছিল।
বিচারক শুধু এই বিতাড়ন প্রক্রিয়াই স্থগিত করেননি, বরং বিমানে করে যাদের ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছিল, তাদের বহনকারী বিমানগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনতে নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালতের এই সিদ্ধান্ত ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য একটি বড় ধাক্কা, কারণ তারা বিতর্কিত ‘এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট’ (Alien Enemies Act of 1798) ব্যবহার করে এই বিতাড়ন প্রক্রিয়াটি দ্রুত করতে চেয়েছিল।
এই আইনটি সাধারণত যুদ্ধের সময় অথবা অন্য কোনো দেশ যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালালে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছে।
কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন গ্যাংটির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ এনে এই আইনের আশ্রয় নেয়।
আদালতে মামলার শুনানিতে বিচারক জেমস বোয়াসবার্গ বলেন, বিতাড়িত করার প্রক্রিয়ার কারণে ওই অভিবাসীদের অপূরণীয় ক্ষতি হবে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, সরকার পক্ষ থেকে এর কোনো উপযুক্ত জবাব পাওয়া যায়নি।
তিনি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন, ফ্লাইটগুলো তখনো যাত্রা করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
বিচারক তাঁর আদেশে বলেছেন, এই স্থগিতাদেশ ১৪ দিনের জন্য বহাল থাকবে অথবা পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
পরবর্তীতে শুনানির জন্য তিনি এই মাসের শেষ তারিখ নির্ধারণ করেছেন।
আদালতে দাখিল করা এক আবেদনে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (American Civil Liberties Union) জানায়, গ্যাংটি কোনো আক্রমণ করেনি, যা আইনের সংজ্ঞার সঙ্গে মেলে না।
তাদের যুক্তি ছিল, গ্যাংয়ের কার্যকলাপ কোনোভাবেই যুদ্ধ ঘোষণার পর্যায়ে পড়ে না।
এদিকে, বিচারকের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ আপিল করেছে।
এই আইনের ইতিহাসে এর আগে মাত্র তিনবার প্রয়োগ করা হয়েছে, এবং সেগুলোর প্রত্যেকটিই ছিল যুদ্ধের সময়।
প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই আইনের অধীনে জার্মানি, অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি, ইতালি এবং জাপানের অভিবাসীদের আটক ও বিতাড়িত করা হয়েছিল।
তথ্য সূত্র: সিএনএন