ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছেন। অফিসের সাজসজ্জা থেকে শুরু করে বিভিন্ন আসবাবপত্র, সবকিছুতেই তাঁর ব্যক্তিগত রুচির ছাপ স্পষ্ট।
বিশেষ করে সোনার ব্যবহার ও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টদের প্রতিকৃতি যোগ করার মাধ্যমে তিনি এই স্থানটিকে নিজের পছন্দের একটি ‘গ্যালারি’তে পরিণত করেছেন।
ওভাল অফিসের ভেতরে ঢুকলে এখন চোখে পড়ে সোনালী আভরণ। দেয়ালগুলিতে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের চিত্রকর্ম, টেবিলের উপর রয়েছে পতাকা, মূর্তি এবং অন্যান্য অলঙ্কার।
জানা গেছে, ট্রাম্প অফিসের দেয়ালের চিত্রকর্মের সংখ্যা তিনগুণ বাড়িয়েছেন। এমনকি টেলিভিশন নিয়ন্ত্রণের রিমোটও সোনালী রঙে মোড়া হয়েছে।
মার-এ-লাগো থেকে আনা সোনার দেবদূতের মূর্তিগুলোও শোভা পাচ্ছে।
ট্রাম্পের এই পরিবর্তনগুলো তাঁর ফ্লোরিডার ব্যক্তিগত বাসভবন মার-এ-লাগো’র কথাই মনে করিয়ে দেয়। তিনি রোজ গার্ডেন সংস্কারের পরিকল্পনা করছেন, যা তাঁর মার-এ-লাগো’র প্যাটিও-এর মতোই হবে।
হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তাদের সাথে তিনি এই বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
হোয়াইট হাউসের সাউথ লনে একটি নতুন বলরুম তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে, যা ভার্সাই প্রাসাদের মিরর হলের আদলে মার-এ-লাগো’র বলরুমের মতো হবে।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি এই নির্মাণ কাজের খরচ বহন করতে প্রস্তুত।
ওভাল অফিসের এই পরিবর্তনগুলোর বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, “এগুলো আমার রিয়েল এস্টেট ব্যবসার অনুভূতি জাগিয়ে তোলে। এটি দেখতে সুন্দর হবে।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের এই রুচি তাঁর পূর্বসূরিদের তুলনায় বেশ ভিন্ন। ওভাল অফিসটিকে তিনি নিজের কাজের স্থান হিসেবেই শুধু দেখেন না, বরং এটিকে একটি প্রদর্শনী কেন্দ্র হিসেবেও তৈরি করতে চান।
ট্রাম্পের অফিসের প্রতিটি পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত তাঁর নিজের। জানা যায়, তিনি অফিসের জন্য ছবি নির্বাচনের ক্ষেত্রেও খুব খুঁতখুঁতে ছিলেন।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সংগ্রহশালা থেকে ছবি বাছাই করেন এবং সেগুলোর ফ্রেম নিয়েও নিজস্ব পছন্দ রয়েছে তাঁর।
আগের প্রেসিডেন্টদের তুলনায় ট্রাম্পের অফিসে অনেক বেশি বস্তু ও শিল্পকর্ম দেখা যায়। তিনি প্রায়ই বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানদের সাথে সাক্ষাৎ করেন এই অফিসে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে তাঁর বিতর্কিত বৈঠকের দৃশ্যও এই ওভাল অফিসে রেকর্ড করা হয়েছে।
একজন সাবেক হোয়াইট হাউস কর্মকর্তা যিনি ডেমোক্রেটিক এবং রিপাবলিকান উভয় প্রশাসনের সঙ্গেই কাজ করেছেন, তিনি বলেন, “প্রত্যেক প্রেসিডেন্টের ওভাল অফিস সাজানোর অধিকার আছে, তবে ট্রাম্পের সাজসজ্জা একটু অন্যরকম, যা রাজকীয় ভাব প্রকাশ করে।”
তথ্যসূত্র: সিএনএন