সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে সম্প্রতি সরকার বিরোধী এক বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে আনুমানিক এক লক্ষেরও বেশি মানুষ অংশ নেয়। বিগত কয়েক মাস ধরে চলা প্রতিবাদ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়, যেখানে দেশটির প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার ভুসিস ও তার সরকারের নীতির তীব্র সমালোচনা করা হয়।
সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা বেলগ্রেডের কেন্দ্রস্থলে সমবেত হয় এবং তাদের হাতে বিভিন্ন ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। বিক্ষোভে আসা মানুষের ঢল এতটাই বেশি ছিল যে, শহরের অনেক রাস্তায় যান চলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে যায়।
বৃষ্টির মধ্যেও বহু মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেয়।
প্রতিবাদটি মূলত সার্বিয়ার উত্তরাঞ্চলে একটি রেলস্টেশনের ছাউনি ধসে ১৫ জন নিহত হওয়ার ঘটনার জের ধরে শুরু হয়। নভেম্বরের এই দুর্ঘটনার পর জনগণের মধ্যে সরকারের দুর্নীতি, নির্মাণ কাজের নিরাপত্তা বিধানে অবহেলা এবং দায়বদ্ধতার অভাব নিয়ে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।
এই ঘটনার প্রতিবাদে প্রায় প্রতিদিনই বিক্ষোভ হয়েছে, যা প্রেসিডেন্ট ভুসিসের ক্ষমতাকে দুর্বল করে দিয়েছে।
বিক্ষোভের শুরু থেকেই এর নেতৃত্ব দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তবে, বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের সঙ্গে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে, ছাত্র নেতারা নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে তাৎক্ষণিকভাবে সমাবেশ শেষ করার ঘোষণা দেন।
এরপরেও বহু বিক্ষোভকারী এলাকা ত্যাগ করতে রাজি হননি এবং তারা সেখানে অবস্থান করেন।
সংবাদ সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, বিক্ষোভের সময় সেখানে প্রায় ১ লক্ষ ৭ হাজার মানুষের সমাগম হয়েছিল। সার্বিয়ার বিরোধী মিডিয়া এই বিক্ষোভকে দেশটির ইতিহাসে বৃহত্তম বলে উল্লেখ করেছে।
বিভিন্ন দিক থেকে আসা বিক্ষোভকারীদের কারণে বেলগ্রেডের গণপরিবহন ব্যবস্থা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বিক্ষোভের আগে প্রেসিডেন্ট ভুসিস সম্ভাব্য গোলযোগের আশঙ্কা প্রকাশ করে গ্রেপ্তার ও কঠোর শাস্তির হুঁশিয়ারি দেন। এছাড়া, ক্রোয়েশিয়া ও স্লোভেনিয়ার কয়েকজন সাংবাদিককে সীমান্তে বাধা দেওয়া হয় এবং তাদের সমাবেশে যোগ দেওয়াকে “নিরাপত্তা ঝুঁকি” হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
প্রেসিডেন্ট ভুসিস সরকার পরিবর্তনের জন্য বিরোধী দলগুলোর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে ছাত্র-আন্দোলনকে উস্কে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন, যার মূল উদ্দেশ্য তাকে ক্ষমতা থেকে সরানো।
যদিও তিনি তার দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেননি।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা