গ্যাবন: এক নতুন গন্তব্য, বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য।
আফ্রিকার পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত গ্যাবন, যেন এক লুকানো রত্ন। পর্যটকদের কাছে এখনো সেভাবে পরিচিত না হলেও, বন্যপ্রাণী এবং প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের জন্য গ্যাবন ধীরে ধীরে আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে।
দেশটির বিশাল এলাকা জুড়ে রয়েছে ঘন সবুজ বনভূমি, যা একে বন্যপ্রাণী প্রেমীদের জন্য এক অসাধারণ গন্তব্য করে তুলেছে।
গ্যাবনের প্রায় নব্বই শতাংশ এলাকা জুড়ে রয়েছে রেইনফরেস্ট বা বৃষ্টি বন। যা এটিকে বন্য হাতির আবাসস্থল করে তুলেছে।
এখানকার হাতিগুলো আকারে কিছুটা ছোট এবং এরা মানুষ থেকে দূরে থাকতে পছন্দ করে। বনের গভীরে তাদের দেখা পাওয়া বেশ কঠিন, তবে অভিজ্ঞ গাইডদের সহায়তায় তাদের কাছাকাছি যাওয়া সম্ভব।
এছাড়াও, গ্যাবনে রয়েছে গরিলা, শিম্পাঞ্জি, ম্যান্ড্রিল এবং আরো অনেক বিরল প্রজাতির প্রাণী।
গ্যাবনের আকর্ষণীয় দিকগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো এর জাতীয় উদ্যানগুলো। এখানকার সরকার পরিবেশ সুরক্ষার ওপর জোর দিয়েছে এবং এরই ধারাবাহিকতায় বেশ কয়েকটি জাতীয় উদ্যান তৈরি করা হয়েছে।
লোয়াঙ্গো ন্যাশনাল পার্ক এদের মধ্যে অন্যতম। এটি প্রায় ৬০০ বর্গমাইল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, যেখানে রয়েছে সাভানা, লেগুন, রেইনফরেস্ট এবং সমুদ্র সৈকত।
এখানকার নদীগুলোতে কুমির ও জলহস্তীর আনাগোনা প্রায়ই দেখা যায়। এছাড়াও, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি তো রয়েছেই, যা পাখিপ্রেমীদের মন জয় করে।
পর্যটকদের জন্য গ্যাবন এখনো সেভাবে পরিচিত নয়। ২০১৯ সালে এখানে প্রায় ৩ লক্ষ ৭৭ হাজার পর্যটকের আগমন ঘটেছিল। যেখানে কেনিয়াতে এই সংখ্যা ছিল প্রায় ২০ লক্ষ।
তবে, গ্যাবন সরকার পর্যটন শিল্পের বিকাশে আগ্রহী এবং অবকাঠামো উন্নয়নের চেষ্টা করছে। উন্নত রাস্তাঘাট এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধা তৈরি করা হচ্ছে, যাতে পর্যটকদের ভ্রমণ আরো সহজ হয়।
গ্যাবনের পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা অনেক। এখানকার আকর্ষণীয় বন্যজীবন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং পরিবেশ সচেতনতা একে আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
তবে, এখানে ভ্রমণের কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। উন্নত দেশগুলোর মতো এখানে সব সুবিধা পাওয়া যায় না।
কিন্তু যারা প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে ভালোবাসেন এবং নতুন কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চান, তাদের জন্য গ্যাবন হতে পারে একটি আদর্শ স্থান।
গ্যাবনের একটি বিশেষ দিক হলো এখানকার স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি। পর্যটকদের গ্যাবন ভ্রমণের সময় তাদের জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার সুযোগ হয়।
তারা বনের বিভিন্ন গাছপালা ও লতাগুল্ম থেকে কিভাবে ঔষধ তৈরি করে, সে সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা যায়।
যদি কেউ একটি ভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতার জন্য আগ্রহী হন, যেখানে প্রকৃতির নীরবতা, বন্যপ্রাণীর সান্নিধ্য এবং স্থানীয় সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হওয়া যায়, তাহলে গ্যাবন হতে পারে তার জন্য উপযুক্ত গন্তব্য।
তবে, ভ্রমণের আগে গ্যাবনের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জেনে নেওয়া ভালো।
তথ্যসূত্র: ট্রাভেল + লেজার এবং অন্যান্য নির্ভরযোগ্য সূত্র।