রমজান ২০২৫: এক প্রান্তে যখন সেহরি, অন্য প্রান্তে ইফতারের সুর। রমজান মাস মুসলিম উম্মাহর জন্য এক পবিত্র মাস।
সারা বিশ্বের মুসলিমরা এই মাসে রোজা রাখেন, আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করেন এবং বিশেষ ইবাদতে মশগুল হন। কিন্তু সময়ের পার্থক্যের কারণে, পৃথিবীর এক প্রান্তে যখন সেহরির (ভোর রাতের খাবার) শেষ হয়, ঠিক তখনই অন্য প্রান্তে শুরু হয় ইফতারের (সন্ধার খাবার) প্রস্তুতি।
এই ভিন্নতা রমজানের বিশ্বজনীন রূপটি ফুটিয়ে তোলে, যা ভৌগোলিক অবস্থান ও সময়ের হিসাবের ওপর নির্ভরশীল।
উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশের রাজশাহী শহরে যখন ভোর হয়, সেহরির শেষ সময়ে লোকজন ডিম পরোটা খেয়ে ফজরের নামাজের জন্য প্রস্তুতি নেয়, ঠিক সেই মুহূর্তে আটলান্টিকের ওপারে নিউ ইয়র্ক সিটিতে সূর্যাস্ত হয় এবং সেখানকার মুসলিম পরিবারগুলো ইফতারের জন্য একত্রিত হয়। একদিকে যখন রাজশাহীর মানুষজন দিনের শুরুটা করছে, তখন নিউইয়র্কের মানুষজন তাদের দীর্ঘ ১৪ ঘণ্টার রোজা ভাঙার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আসলে, পৃথিবীর আবর্তন এবং সময়ের হিসাবের কারণে সব সময়ই কোনো না কোনো শহরে সেহরি অথবা ইফতারের দৃশ্য দেখা যায়। কারো সেহরি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অন্য কোথাও ইফতার শুরু হয়।
উত্তর গোলার্ধে বসবাসকারী মুসলিমদের জন্য দিনগুলো একটু লম্বা হতে থাকে, ফলে সেহরির সময় এগিয়ে আসে এবং ইফতারের সময়ও পরে হয়। আর দক্ষিণ গোলার্ধের মুসলিমদের ক্ষেত্রে এর বিপরীত ঘটে, অর্থাৎ দিন ছোট হতে থাকে।
রমজান মাস ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম। এই মাসে রোজা রাখা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরজ।
রোজার মাধ্যমে মানুষ আত্মশুদ্ধি অর্জন করে এবং সৃষ্টিকর্তার প্রতি তাদের আনুগত্য প্রকাশ করে। রমজানের মূল উদ্দেশ্য হলো তাকওয়া (আল্লাহর ভয়) অর্জন করা, যা মানুষকে সংযমী ও ধার্মিক হতে সাহায্য করে।
নিচে কয়েকটি শহরের উদাহরণ দেওয়া হলো, যেখানে এক স্থানে সেহরি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্য স্থানে ইফতার শুরু হয়:
রমজান মাস শুধু উপবাসের মাস নয়, এটি ত্যাগ, সহানুভূতির মাসও। সারা বিশ্বের মুসলিমদের এই সময়ের ভিন্নতা, একই সময়ে ইবাদতের মাধ্যমে একতাবদ্ধ হওয়ার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা