যুক্তরাষ্ট্র থেকে এল সালভাদরে সন্দেহভাজন গ্যাং সদস্যদের বিতাড়ন নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি, ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন একটি আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ভেনেজুয়েলার কুখ্যাত ‘ট्रेन দে আরাগুয়া’ গ্যাংয়ের ২৩৮ জন সদস্য এবং সালভাদরের এমএস-১৩ গ্যাংয়ের ২৩ জন সদস্যকে এল সালভাদরে ফেরত পাঠিয়েছে।
বিতর্কিত এই পদক্ষেপের কারণ এবং এর পেছনের ঘটনাগুলো নিচে তুলে ধরা হলো:
**ঘটনার সূত্রপাত**
ট্রাম্প প্রশাসন মূলত ‘এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট’ (Alien Enemies Act) নামক একটি আইনের আশ্রয় নিয়ে এই বিতাড়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। ১৭৯৮ সালে প্রণীত এই আইনটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে বিদেশি নাগরিকদের আটক বা বিতাড়িত করার ক্ষমতা দেয়। ট্রাম্প প্রশাসন এই আইনের আওতায় ‘ট्रेन দে আরাগুয়া’ গ্যাংটিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট নাজিব বুকেলে যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপে সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি জানান, বিতাড়িত গ্যাং সদস্যদের এক বছরের জন্য দেশটির ‘সন্ত্রাস দমন কেন্দ্রে’ (CECOT) রাখা হবে। এই মেয়াদ বাড়ানোও হতে পারে। এর বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র এল সালভাদরকে ক্ষতিপূরণ দেবে।
**আদালতের নিষেধাজ্ঞা ও প্রশাসনের পদক্ষেপ**
বিতাড়ন প্রক্রিয়া শুরুর আগে, ফেডারেল বিচারক জেমস বোয়াসবার্গ ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেন। তবে, আদালতের এই নির্দেশ অমান্য করে বিতাড়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আদালতের আদেশ জারির আগেই বিতাড়ন সম্পন্ন হয়ে যাওয়ায়, তারা আদালতের নির্দেশ অমান্য করেনি।
**আইনের অপব্যবহারের অভিযোগ**
ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ নিয়ে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। সমালোচকদের মতে, এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট-এর ব্যবহার একটি গুরুতর ভুল। কারণ, এটি সাধারণত যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে প্রয়োগ করার কথা। বিরোধী দল এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য এই আইনের অপব্যবহার করছে।
**বিতাড়িতদের ভবিষ্যৎ**
বিতাড়িত গ্যাং সদস্যদের এল সালভাদরের সন্ত্রাস দমন কেন্দ্রে (CECOT) রাখা হয়েছে, যেখানে তাদের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এই কেন্দ্রে আসা-যাওয়া, শিক্ষা এবং বিনোদনের কোনো সুযোগ নেই। বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে তাদের কোনো যোগাযোগও রাখতে দেওয়া হয় না।
যুক্তরাষ্ট্র ও এল সালভাদরের মধ্যে হওয়া এই চুক্তির ফলে বিতর্কিত গ্যাং সদস্যদের জীবন আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।
**ভবিষ্যতের প্রভাব**
এই বিতর্কের ফলে ভবিষ্যতে অভিবাসন নীতি এবং ক্ষমতা প্রয়োগের বিষয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হতে পারে। বিশেষ করে, এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্টের মতো বিতর্কিত আইনের ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং মানবাধিকারের ক্ষেত্রেও এর প্রভাব দেখা যেতে পারে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা।