জর্জিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট মিখাইল সাকাশভিলিকে আরও সাড়ে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। সীমান্ত অবৈধভাবে অতিক্রম করার অভিযোগে এই সাজা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত সপ্তাহে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তাকে নয় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। সব মিলিয়ে বর্তমানে ১২ বছর ৬ মাস কারাভোগ করতে হবে তাকে।
সাকাশভিলি এবং তার সমর্থকরা এই রায়কে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করছেন। তাদের অভিযোগ, বর্তমান ক্ষমতাসীন ‘জর্জিয়ান ড্রিম’ সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করছে।
তারা আরও বলছেন, সরকার গণতন্ত্রকে দুর্বল করছে এবং রাশিয়ার দিকে ঝুঁকছে।
২০০৩ সালের ‘গোলাপ বিপ্লবে’ জনগণের ব্যাপক সমর্থনে ক্ষমতায় এসেছিলেন সাকাশভিলি। ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে তিনি দেশকে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে উৎসাহিত করেন এবং সরকারি খাতে সংস্কারের উদ্যোগ নেন।
এর ফলে দেশটির উন্নতি দ্রুত হতে শুরু করে। তবে, তার শাসনামলের শেষ দিকে পুলিশি নির্যাতন এবং ২০০৮ সালে রাশিয়ার সঙ্গে হওয়া যুদ্ধ বেশ সমালোচিত হয়।
সাকাশভিলি দীর্ঘদিন ধরে ইউক্রেনে স্বেচ্ছা-নির্বাসনে ছিলেন। ২০২১ সালে তিনি দেশে ফিরে আসার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে তাকে ছয় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
সাকাশভিলির দল ইউনাইটেড ন্যাশনাল মুভমেন্ট (ইউএনএম) অভিযোগ করেছে, জর্জিয়ার আদালত সরকারের নির্দেশে কাজ করছে এবং বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করছে।
সাকাশভিলির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের প্রতিবাদে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা সাকাশভিলিকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে এবং তার স্বাস্থ্য ও অধিকার সুরক্ষার জন্য জর্জিয়া সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
ইউরোপীয় কাউন্সিলের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা তাকে ‘রাজনৈতিক বন্দী’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তার প্রতি হওয়া আচরণকে ‘রাজনৈতিক প্রতিশোধ’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
সাকাশভিলির সমর্থকরা বলছেন, রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের কারণে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো নয় বর্তমান সরকারের। তাই, তারা সাকাশভিলিকে দুর্বল করতে চাইছে, যিনি একসময় পশ্চিমাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা