শিরোনাম: ট্রাম্পের দাবি, ‘অটোপেন’ ব্যবহারের কারণে বাইডেনের ক্ষমাগুলি অবৈধ।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার এক বিস্ফোরক মন্তব্য করে বলেছেন, বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতা গ্রহণের শেষ দিনে যারা ক্ষমা ঘোষণা করেছেন, সেগুলি “বাতিলযোগ্য” এবং “অকার্যকর”। ট্রাম্পের মতে, এই ক্ষমাগুলো ‘অটোপেন’-এর মাধ্যমে স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যা প্রেসিডেন্টের অনুমোদন ছাড়াই সম্পন্ন হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে ট্রাম্প বাইডেনকে ব্যঙ্গ করে আক্রমণ করেন এবং একইসাথে ক্যাপিটলে ৬ জানুয়ারির ঘটনার তদন্তকারী কমিটির সদস্যদেরও অভিযুক্ত করেন। তিনি লেখেন, “স্লিপি জো বাইডেন রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদের ‘আনসিলেক্ট কমিটি’ এবং আরো অনেককে যে ক্ষমা করেছেন, তা এখানে বাতিল, অকার্যকর এবং কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে ঘোষণা করা হলো, কারণ সেগুলি অটোপেন ব্যবহার করে করা হয়েছে।
অন্য কথায়, জো বাইডেন নিজে সেগুলিতে স্বাক্ষর করেননি, এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, তিনি এই বিষয়গুলি সম্পর্কে কিছুই জানেন না!”
তবে ট্রাম্প তার দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ পেশ করেননি।
এর আগে, ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ একটি রক্ষণশীল থিংক ট্যাংক, ‘হেরিটেজ ফাউন্ডেশন’, বাইডেনের স্বাক্ষর নকল করার জন্য একটি যন্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ তোলে।
বাইডেন সম্ভবত প্রতিশোধের সম্ভবনা কমাতে পরিবারের সদস্য এবং ট্রাম্পের বিরোধীদের ক্ষমা করেছিলেন।
ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী সূত্রে জানা গেছে, তিনি যখন নিজের ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ অ্যাকাউন্টে কিছু লেখেন, তখন বড় হাতের অক্ষরের ব্যবহারসহ বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য থেকে তা বোঝা যায়।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রেসিডেন্টকে ব্যক্তিগতভাবে ক্ষমা সংক্রান্ত নথিতে স্বাক্ষর করতে হবে—ট্রাম্পের এই দাবি সঠিক নয়।
১৯২৯ সালে, মার্কিন বিচার বিভাগ জানিয়েছিল, ক্ষমা প্রদানের পদ্ধতি সম্পূর্ণরূপে প্রেসিডেন্টের এখতিয়ার।
গত বছর, একটি ফেডারেল আপিল আদালত জানায়, প্রেসিডেন্টের ক্ষমা ঘোষণার জন্য লিখিত রূপ জরুরি নয়।
রবিবার এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, “বিষয়টি আমার সিদ্ধান্তের নয় – আদালতই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে – তবে আমি বলব, সেগুলি বাতিলযোগ্য, কারণ আমি নিশ্চিত যে বাইডেনের এ বিষয়ে কোনো ধারণা ছিল না এবং কেউ একজন অটোপেন ব্যবহার করে সেগুলিতে স্বাক্ষর করেছে এবং ক্ষমা ঘোষণা করেছে।”
উল্লেখ্য, বাইডেন তার ক্ষমতা ত্যাগের দিন, অর্থাৎ ২০শে জানুয়ারি, ক্যাপিটলে ৬ জানুয়ারির হামলা তদন্তকারী কমিটির সদস্যদের আগাম ক্ষমা করে দেন।
ট্রাম্প ২০২০ সালের নির্বাচনে বাইডেনের কাছে পরাজিত হওয়ার পর এই হামলার উসকানি দিয়েছিলেন।
এই ঘটনার পর রিপাবলিকান সদস্য লিজ চেনি এবং অ্যাডাম কিঞ্জিঙ্গারসহ দুই জন ট্রাম্প বিরোধী প্রতিনিধিকে নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তারা দুজনেই বর্তমানে কংগ্রেস থেকে বিদায় নিয়েছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টে ট্রাম্প আরও লেখেন, “ক্ষমা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বাইডেনকে বুঝিয়ে বলা হয়নি বা তিনি অনুমোদনও করেননি।
তিনি সে সম্পর্কে কিছুই জানতেন না, এবং যারা এটা করেছে, তারা সম্ভবত একটি অপরাধ করেছে।”
কমিটির নথিপত্র নিয়ে ভিত্তিহীন অভিযোগ করে তিনি বলেন, “অতএব, ‘আনসিলেক্ট কমিটির’ সদস্যরা, যারা আমার এবং আরো অনেক নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে তাদের দুই বছরের ‘witch hunt’-এর সময় সমস্ত প্রমাণ ধ্বংস করেছে ও মুছে ফেলেছে, তাদের বোঝা উচিত যে তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ পর্যায়ে তদন্ত হতে পারে।
তারা সম্ভবত এমন নথিপত্রের জন্য দায়ী, যেগুলিতে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ প্রেসিডেন্ট, ‘ক্রুকড জো বাইডেন’-এর জ্ঞান বা সম্মতি ছাড়াই স্বাক্ষর করা হয়েছিল!”
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান