প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে কয়েক হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে কিভাবে একদল গিরগিটি ফিজি দ্বীপে পৌঁছেছিল? বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছিলেন। সম্প্রতি এক গবেষণায় জানা গেছে, সম্ভবত গাছের ভেলায় চড়ে আটলান্টিক পাড়ি দিয়েছিল তারা।
এই আবিষ্কার জীববৈচিত্র্যের গবেষণা এবং সংরক্ষণে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সাইমন স্কারপেত্তার মতে, উত্তর আমেরিকা থেকে ফিজি পর্যন্ত প্রায় ৮ হাজার কিলোমিটার সমুদ্র পাড়ি দেওয়াটা ছিল রেকর্ড গড়া একটি ঘটনা।
এত দীর্ঘ সমুদ্রযাত্রা এর আগে কোনো স্থলজ মেরুদণ্ডী প্রাণী করেনি। গবেষকরা বলছেন, সম্ভবত ৩০-৩১ মিলিয়ন বছর আগে, গাছের গুঁড়ি এবং অন্যান্য জলজ উদ্ভিদের একটি ভেলায় চড়ে এই বিশাল পথ পাড়ি দিয়েছিল গিরগিটির দল।
গবেষকরা ফিজি এবং উত্তর আমেরিকার মরুভূমির গিরগিটির ডিএনএ পরীক্ষা করে দেখেছেন। তাদের মধ্যে গভীর সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া গেছে। এই সম্পর্ক প্রমাণ করে যে, উত্তর আমেরিকার গিরগিটি থেকেই ফিজি দ্বীপের গিরগিটির উদ্ভব।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, সমুদ্রযাত্রার সময় এই গিরগিটিগুলো সম্ভবত ভেলায় থাকা গাছপালা খেয়ে এবং অল্প পানিতে টিকে থাকতে পারতো। গবেষণায় আরও জানা গেছে, একসময় আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে ইকুয়েডরের কাছাকাছি গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ এবং ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জেও গিরগিটির দল গিয়েছিল।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, ফিজিতে গিরগিটিদের আগমন সেখানকার পরিবেশের সঙ্গে তাদের খাপ খাইয়ে নেওয়ার প্রমাণ। তবে, বর্তমানে ফিজির অনেক গিরগিটি প্রজাতি বিলুপ্তির পথে।
এছাড়া, সেখানে সবুজ গিরগিটির উপদ্রবও বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগের গবেষক রবার্ট ফিশার জানিয়েছেন, গিরগিটির উৎপত্তিস্থল সম্পর্কে ধারণা পেলে তাদের সংরক্ষণে সুবিধা হবে। গবেষণাটি ‘প্রসিডিংস অফ দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সেস’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস