লেবাননের এক চিকিৎসককে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি হিজবুল্লাহর একজন নেতার প্রতি সমর্থন জুগিয়েছিলেন। মার্কিন অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগ সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে। এই ঘটনার জেরে ইতিমধ্যেই তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
ডা. রশা আলাউয়েহ নামের ওই চিকিৎসককে সম্প্রতি ভিসাসহ যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বোস্টন লোগান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর তাঁকে আটক করা হয়। এরপর, গত সপ্তাহান্তে তাঁকে লেবাননে ফেরত পাঠানো হয়। যদিও এর আগে একজন ফেডারেল বিচারক শুনানির আগে তাঁকে বহিষ্কার না করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
মার্কিন অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, ডা. আলাউয়েহ নাকি সরাসরি হিজবুল্লাহর এক নেতার প্রতি সমর্থন জানান এবং তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। ভিসা পাওয়া কোনো অধিকার নয়, বরং এটি একটি বিশেষ সুযোগ। যারা আমেরিকানদের হত্যা করে, সেই সন্ত্রাসীদের সমর্থন করে, তাদের ভিসা দেওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না।
আলাউয়েহর আইনজীবী জানিয়েছেন, তিনি তাঁর মক্কেলকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনার জন্য আইনি লড়াই চালিয়ে যাবেন। আলাউয়েহ পেশায় একজন কিডনি বিশেষজ্ঞ এবং রাইস আইল্যান্ডে তাঁর বহু রোগী রয়েছেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে রোগীদের চিকিৎসায় সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।
আদালতের নথি অনুযায়ী, ডা. আলাউয়েহর ফোনে হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহর ছবি পাওয়া গেছে। এমনকি তাঁর ফোনে হিজবুল্লাহর যোদ্ধা ও শহীদদের ছবিও ছিল। তবে আলাউয়েহ জানিয়েছেন, তিনি ওই নেতাকে তাঁর ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক শিক্ষার জন্য অনুসরণ করেন, রাজনীতির সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই।
যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগের আগে কেন তিনি ছবিগুলো সরিয়ে ফেলেছিলেন, এমন প্রশ্নের জবাবে আলাউয়েহ বলেছিলেন, “আমি কোনো ভুল করছি না, তবে ছবিগুলোর কারণে ভুল ধারণা তৈরি হতে পারে। রাজনৈতিক বা সামরিক কোনো কিছুর সঙ্গেই আমার সম্পর্ক নেই।”
ডা. আলাউয়েহ এর আগে ব্রাউন ইউনিভার্সিটিতে কাজ করেছেন। তাঁর ভিসা পাওয়ার পরে, তিনি সেখানে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। ব্রাউন মেডিসিন জানিয়েছে, আলাউয়েহ তাদের কর্মী এবং ব্রাউন ইউনিভার্সিটির মেডিকেল স্কুলের সঙ্গে যুক্ত একটি অলাভজনক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে রোগী দেখতেন।
এদিকে, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিলের আইনজীবীরাও তাঁর মুক্তির জন্য আবেদন করেছেন। গাজা যুদ্ধ নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শনের কারণে তাঁকে আটক করা হয়েছিল। আইনজীবীরা বলছেন, এই ধরনের পদক্ষেপের ফলে বিদেশি নাগরিকরা তাঁদের অধিকার নিয়ে কথা বলতে ভয় পাবেন।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস