হার্ভার্ডে এখন থেকে বছরে ২ কোটি টাকার কম আয় করা পরিবারের ছেলেমেয়েরা বিনামূল্যে পড়ার সুযোগ পাবে। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে এই নিয়ম কার্যকর হবে।
সম্প্রতি, বিশ্বসেরা এই বিদ্যাপীঠটি তাদের ওয়েবসাইটে এই ঘোষণা দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে পুরনো এবং নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। সাধারণত, এখানে পড়াশোনার খরচ অনেক বেশি।
তবে, কর্তৃপক্ষের নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে, এখন থেকে যাদের পরিবারের বার্ষিক আয় ১ কোটি ১০ লাখ টাকার নিচে, তাদের শিক্ষা, আবাসন, স্বাস্থ্য বীমা এবং বাড়ি থেকে ক্যাম্পাসে আসা-যাওয়ার খরচ বহন করবে হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ।
বর্তমানে, হার্ভার্ডে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের টিউশন ফি বছরে প্রায় ৫৬ হাজার মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬২ লাখ টাকার বেশি। এছাড়া, অন্যান্য খরচসহ শিক্ষার্থীদের বছরে প্রায় ৮৩ হাজার ডলার বা ৯১ লাখ টাকার বেশি খরচ হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্তের মূল লক্ষ্য হলো, মধ্যবিত্ত পরিবারের মেধাবী ছেলেমেয়েদের হার্ভার্ডে পড়াশোনার সুযোগ করে দেওয়া।
এর মাধ্যমে বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট থেকে আসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আদান-প্রদান বাড়বে, যা তাদের ব্যক্তিগত ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে সহায়তা করবে। হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট, অ্যালান এম. গারবার এক বিবৃতিতে এমনটাই জানিয়েছেন।
হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে তাদের বিশাল অংকের একটি ফান্ড বা ভাণ্ডার রয়েছে, যা তাদের এই কাজে সহায়তা করবে।
জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের হিসাব অনুযায়ী, হার্ভার্ডের এই ফান্ড বা এন্ডাওমেন্টের পরিমাণ ৫৩.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫ লক্ষ ৮৮ হাজার কোটি টাকার বেশি।
হার্ভার্ডের এই সিদ্ধান্তের ফলে, উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
শুধু হার্ভার্ডই নয়, এর আগে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি), ইউনিভার্সিটি অফ পেনসিলভানিয়া এবং ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাস-এর মতো নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও এমন আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
বর্তমানে, হার্ভার্ডে প্রায় ৫৫ শতাংশ শিক্ষার্থী আর্থিক সহায়তা পেয়ে থাকে। যেখানে একটি পরিবারের গড় সাহায্য করার পরিমাণ ছিল ১৫,৭০০ মার্কিন ডলার (প্রায় ১৭ লক্ষ টাকার বেশি)।
উচ্চশিক্ষার ক্রমবর্ধমান খরচ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এই ধরনের সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কারণ, এর ফলে মেধাবী শিক্ষার্থীরা আর্থিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ পাবে এবং উন্নত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে পারবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন