যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালতের নির্দেশকে উপেক্ষা করার অভিযোগে পড়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। ভেনেজুয়েলার সন্দেহভাজন গ্যাং সদস্যদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে বিচারকের দেওয়া নির্দেশ সত্ত্বেও, তা মানা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
আদালতে শুনানিতে বিচারক জেমস বোয়াসবার্গ এই বিষয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি প্রশ্ন করেন, সরকারের এমন পদক্ষেপ কি বিচার বিভাগের প্রতি চরম অবজ্ঞা নয়? আদালতকে পাশ কাটিয়ে নিজেদের ইচ্ছেমতো কাজ করার চেষ্টা করা হচ্ছে কিনা, সেই বিষয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন।
অভিযোগ উঠেছে, ট্রাম্প প্রশাসন আদালতের লিখিত নির্দেশকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। বিচারক মৌখিকভাবে যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা লিখিত না থাকার কারণে প্রশাসন তা মানতে রাজি হয়নি। তাদের যুক্তি ছিল, আদালতের লিখিত আদেশে ওই বিষয়টি উল্লেখ না থাকায়, তারা তা মানতে বাধ্য নয়। এমনকি, বিমানের ফ্লাইটগুলো যখন আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় প্রবেশ করে, তখন বিচারকের এখতিয়ার শেষ হয়ে যায় বলেও তারা দাবি করে।
আদালতে দেওয়া বক্তব্যে বিচারক বোয়াসবার্গ এই যুক্তির তীব্র বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, আদালতের ক্ষমতা আকাশসীমার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। যুক্তরাষ্টের বিচার বিভাগীয় ক্ষমতা অনেক বেশি বিস্তৃত। বিমানের গতিবিধির ওপর সরকারি কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের এখতিয়ার রয়েছে, তাই আকাশসীমার বাইরে গেলেও আদালতের ক্ষমতা বহাল থাকে।
শুনানিতে জানা যায়, ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের ফেরত পাঠানোর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ‘এলাইন এনিমিজ অ্যাক্ট’ নামের একটি পুরোনো আইন ব্যবহারের চেষ্টা করা হয়েছে। এই আইনের আওতায়, সাধারণত, কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধাবস্থা তৈরি হলে, সেই দেশের নাগরিকদের ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া যায়। কিন্তু এখানে সেই আইনের প্রয়োগের যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
আদালতের নির্দেশ অমান্য করার বিষয়ে হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। কেউ কেউ আদালতের প্রতি সম্মান দেখানোর কথা বললেও, কেউ কেউ ছিলেন বেশ আক্রমণাত্মক। হোয়াইট হাউজের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা অভিবাসন আইনের অধীনে কাজ করেছেন। কিন্তু সাবেক এক কর্মকর্তা সরাসরি বিচারকের নির্দেশকে তোয়াক্কা না করার কথা জানান।
আদালত এই বিষয়ে সরকারের কাছে আরও বিস্তারিত তথ্য চেয়েছেন এবং আগামীকালের মধ্যে তা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান