গাজায় ইসরায়েলি হামলা: ধ্বংসস্তূপের মাঝে ফিরে আসা বিভীষিকা।
গাজায় যখন রমজান মাসের পবিত্রতা বিরাজ করছিল, ঈদের আনন্দ প্রস্তুতি চলছিল, ঠিক তখনই গভীর রাতে আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত করে ফিরে আসে যুদ্ধের বিভীষিকা। ইসরায়েলি বিমান হামলার শব্দে ঘুম ভেঙে যায় অনেকের।
স্থানীয় সময় রাত ২টা ১০ মিনিটে, যখন সবাই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, তখনই শুরু হয় এই ধ্বংসযজ্ঞ।
আতঙ্কে চিৎকার করে ওঠে ছোট্ট শিশু, “বাবা, মা, কি হচ্ছে?” – মায়ের বুকে মুখ লুকায় সে। চারিদিকে বোমা আর গুলির বিকট শব্দ।
ঘরবাড়ি কেঁপে উঠছে, মাথার ওপর যেন আকাশ ভেঙে পড়ছে। প্রথমে অনেকেই বুঝতে পারছিল না, কি ঘটছে? কোন দিক থেকে আসছে এই আক্রমণ?
পর মুহূর্তেই খবর আসতে শুরু করে। দেইর আল-বালাহ, নুসেইরাত, খান ইউনিস, রাফাহ, জাবালিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি বিমান হামলা চলছে।
আবাসিক ভবনগুলোতে আঘাত হানা হয়েছে। বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর জন্য তৈরি করা তাঁবুগুলোতেও বোমা বর্ষণ করা হয়েছে।
“আগুন-বৃষ্টি” চলছে গাজার কেন্দ্রস্থলে।
এরই মধ্যে আহতদের আর্তনাদ, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের সাহায্যের আকুতি।
অ্যাম্বুলেন্সের জন্য চিৎকার, আর ফায়ারিংয়ের শব্দে গাজার আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ধ্বংসস্তূপের ছবি, আহত মানুষের কান্না, নিহতদের স্বজনদের আহাজারি।
ইসরায়েল আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিরতি ভেঙে গাজায় পুনরায় হামলা শুরুর ঘোষণা দেয়। মনে হচ্ছিল, যেন মাথার উপর আকাশ ভেঙে পড়েছে।
“আবার যুদ্ধ! ঈশ্বর, এটা হতে পারে না। আমরা আর বোমা হামলা, আতংক চাই না।
– আতঙ্কে চিৎকার করে উঠেন অনেকে।
যুদ্ধ শুরুর কয়েক দিন আগে, লেখক তার বাবা ও দুই বোনের সাথে একটি সাধারণ পারিবারিক জমায়েতের আয়োজন করেছিলেন। সবাই মিলে একসাথে সেহরি খাওয়ার পরিকল্পনা ছিল।
ঈদ ও গ্রীষ্মের পোশাক কেনার জন্য তাদের উত্তরের দিকে যাওয়ারও কথা ছিল।
কিন্তু যুদ্ধ সব ওলট-পালট করে দেয়। গাজায় পরিকল্পনা যেন অপরাধ।
যুদ্ধ পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ, তা বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য লেখক তার অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করেন। তিনি জানান, তারা যখন নতুন করে ঘর বাঁধার চেষ্টা করছিলেন, তখনই আবার সব এলোমেলো হয়ে গেল।
এমনকি একটি আলমারি কেনার স্বপ্নও যেন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।
গাজার মানুষ এখন শুধু জানে, কিভাবে এই ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বাঁচা যায়।
তাদের আর কোনো স্বপ্ন নেই, কোনো পরিকল্পনা নেই, এমনকি ভবিষ্যতের জন্য কোনো প্রত্যাশাও নেই।
তাদের একটাই চাওয়া – কোনোমতে বেঁচে থাকা।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা