উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক পদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। আগামী ১লা এপ্রিল এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং এর আগে ভোটারদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি করতে এরই মধ্যে আগাম ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে।
এই নির্বাচনের ফল নির্ধারণ করবে অঙ্গরাজ্যের সর্বোচ্চ আদালতের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে। যুক্তরাষ্ট্রের এই অঙ্গরাজ্যে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক পদের নির্বাচনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর মাধ্যমে নির্ধারিত হবে আদালতটিতে উদারপন্থী বিচারকদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকবে কিনা।
এই বিষয়টি একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বিষয় হিসেবে দেখা হচ্ছে, কারণ এটি দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফলের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান দল উভয়ের জন্যই এই নির্বাচন তাই সম্মানের লড়াই।
নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ব্রাড শিমেল এবং ডেমোক্রেট দলের প্রার্থী সুজান ক্রফোর্ড প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই নির্বাচনের দিকে এখন সবার দৃষ্টি।
কারণ, এই নির্বাচনের রায় নির্ধারণ করবে উইসকনসিনের সুপ্রিম কোর্টের ভবিষ্যৎ গতিপথ। জানা গেছে, এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ হয়েছে, যা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।
নির্বাচনে প্রভাবশালী ব্যক্তি ও বিভিন্ন সংস্থার বিপুল অর্থ বিনিয়োগও আলোচনার জন্ম দিয়েছে। প্রযুক্তি ব্যবসায়ী ইলন মাস্ক এবং অন্যান্য ধনী ব্যক্তিরা তাঁদের পছন্দের প্রার্থীদের জেতাতে অর্থ ঢালছেন।
এমনকি, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপদেষ্টা ও তাঁর ছেলেসহ রিপাবলিকান দলের প্রভাবশালী নেতারাও তাঁদের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন। অন্যদিকে, ডেমোক্রেটদের সমর্থনেও এগিয়ে এসেছেন অনেকে।
তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বিভিন্ন রাজ্যের গভর্নর এবং বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। উইসকনসিনের সুপ্রিম কোর্টের এই নির্বাচন শুধু অঙ্গরাজ্যের বিচার বিভাগের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এটি জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটেও বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।
কারণ, এই আদালতের রায়ের ওপর অঙ্গরাজ্যের আইন ও নীতি-নির্ধারণের অনেক কিছুই নির্ভর করে। বর্তমানে, আদালতটিতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি চলছে, যার মধ্যে গর্ভপাত বিষয়ক একটি পুরনো আইনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা মামলা অন্যতম।
এছাড়াও, শ্রমিক ইউনিয়ন, ভোটাধিকার এবং নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত বিষয়গুলোও আদালতের বিচারাধীন। যুক্তরাষ্ট্রে সুপ্রিম কোর্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ।
এর প্রধান কাজ হলো দেশের আইন ও সংবিধানের ব্যাখ্যা করা এবং নাগরিকদের অধিকার রক্ষা করা। বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের মতোই, উইসকনসিনের সুপ্রিম কোর্টও রাজ্যের আইনগত কাঠামোতে একটি অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে।
উইসকনসিনের এই নির্বাচন আগামী ৩০শে মার্চ পর্যন্ত চলবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই নির্বাচনের ফল শুধু রাজ্যের বিচার বিভাগের ওপরই নয়, বরং জাতীয় পর্যায়েও সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস