মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী এক জার্মান নাগরিককে বিমানবন্দরে জিজ্ঞাসাবাদের নামে “নির্মম নির্যাতনের” অভিযোগ উঠেছে। জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি খতিয়ে দেখছে এবং এর কারণ অনুসন্ধানে নেমেছে।
জানা গেছে, ওই জার্মান নাগরিকের নাম ফাবিয়ান শ্মিট, যিনি দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন এবং তার গ্রিন কার্ড রয়েছে।
ফাবিয়ান শ্মিট সম্প্রতি লুক্সেমবার্গ থেকে ফিরে আসার সময় বোস্টনের লোগান বিমানবন্দরে নামার পর মার্কিন সীমান্ত কর্মকর্তারা তাকে আটক করেন। তার মা অ্যাস্ট্রিড সিনিয়র এক সাক্ষাৎকারে জানান, বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা তার ছেলেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন এবং তাকে নগ্ন করে ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করতে বাধ্য করেন।
এছাড়া, তাকে খাবার ও পানি সরবরাহ করা হয়নি এবং উদ্বেগ ও হতাশাজনিত ঔষধও দেওয়া হয়নি।
জার্মান সরকারের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা ইতোমধ্যে এমন তিনটি ঘটনার কথা জানতে পেরেছেন, যেখানে জার্মান নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হয়েছে এবং তাদের আটক করা হয়েছে।
মুখপাত্র আরও জানান, জার্মানি সরকার বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং অন্যান্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে দেখছে, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নাকি মার্কিন অভিবাসন নীতির পরিবর্তনের ফল।
ফাবিয়ান শ্মিট এবং তার মা ২০০৭ সালে জার্মানি থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং পরের বছর তারা স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পান। গত বছর তিনি তার গ্রিন কার্ডের নবায়ন করেন এবং তার বিরুদ্ধে কোনো আইনি অভিযোগ নেই বলে জানা গেছে।
এদিকে, মার্কিন কাস্টমস ও সীমান্ত সুরক্ষা বিভাগ (US Customs and Border Protection) এক বিবৃতিতে ফাবিয়ান শ্মিটের প্রতি ওঠা অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে।
তবে, তারা নির্দিষ্ট করে কোনো অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বোস্টনের কনস্যুলেট এই বিষয়ে সহযোগিতা করছে।
জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরও বলেন, “আমরা আমাদের মিত্র দেশগুলোর কাছে প্রত্যাশা করি যে, তারা আটককৃতদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড অনুযায়ী আচরণ করবে।
এই ঘটনার পাশাপাশি, আরও কয়েকজন বিদেশি নাগরিককে মার্কিন সীমান্ত কর্মকর্তারা হয়রানি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এদের মধ্যে রয়েছেন, বার্লিনের একজন ট্যাটু শিল্পী জেসিকা ব্রোশ এবং জার্মানির স্যাক্সনি-আনহাল্টের বাসিন্দা লুকাস সিয়ালাফ।
জানা গেছে, তারা দুজনেই পর্যটক ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। এছাড়া, কানাডার একজন অভিনেত্রী এবং যুক্তরাজ্যের একজন নারীও সীমান্ত কর্মকর্তাদের হাতে নিগ্রহের শিকার হয়েছেন।
এই ঘটনাগুলো আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা মার্কিন অভিবাসন নীতির সমালোচনা করেছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান