যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারে দরপতন, প্রযুক্তি খাতের শেয়ারের দুর্বলতাই প্রধান কারণ। ঢাকা, [তারিখ]- বিশ্ব অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি, যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারে মঙ্গলবার দরপতন হয়েছে।
প্রযুক্তি খাতের প্রভাবশালী কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম কমার কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক এক শতাংশের বেশি কমেছে, যা বাজারের অস্থিরতা নির্দেশ করে।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, প্রযুক্তি খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে টেসলা, গুগল-এর মালিকানাধীন আলফাবেট এবং সার্ভার প্রস্তুতকারক সুপার মাইক্রো কম্পিউটার-এর শেয়ারের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্কের কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্ত এবং বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারে তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা হতাশ হয়েছেন।
অন্যদিকে, আলফাবেট তাদের সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান উইজ-কে প্রায় ৩ হাজার ২০০ কোটি ডলারে (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩ লক্ষ ৭২ হাজার কোটি টাকা) কেনার ঘোষণা দিয়েছে, যা তাদের শেয়ারের দামে প্রভাব ফেলেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি সংক্রান্ত উদ্বেগের কারণেও বাজারের ওপর চাপ বাড়ছে। শুল্ক আরোপ এবং অন্যান্য বাণিজ্য সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের ফলে মার্কিন অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে, এমন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বিনিয়োগকারীরা এখন ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে তাকিয়ে আছে। ফেড সুদের হার অপরিবর্তিত রাখবে, নাকি অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে কোনো পদক্ষেপ নেবে, সেদিকেই সকলের দৃষ্টি।
এই পরিস্থিতিতে ফেডারেল রিজার্ভের সুদ নীতি বিষয়ক বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে বাজার। ধারণা করা হচ্ছে, ফেড হয়তো সুদের হার অপরিবর্তিত রাখতে পারে। কারণ একদিকে যেমন সুদের হার কমালে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য ঋণ নেওয়া সহজ হবে, তেমনি মূল্যস্ফীতি বাড়ারও সম্ভাবনা থাকে।
তবে বাজারের অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, ফেড সম্ভবত সুদের হার অপরিবর্তিত রাখবে। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক বাজারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
ইউরোপ ও এশিয়ার শেয়ার বাজারগুলোতে সূচক ঊর্ধ্বমুখী ছিল। জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক ১.২ শতাংশ বেড়েছে। তবে ইন্দোনেশিয়ার শেয়ার বাজারে দরপতন হয়, এবং লেনদেন কিছু সময়ের জন্য স্থগিত রাখতে হয়।
দেশটির সরকার একটি সার্বভৌম সম্পদ তহবিল চালু করার পর ব্যাংকগুলোর শেয়ারের দাম কমেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের এই অস্থিরতা বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশেষ করে, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বন্ড মার্কেটে, ১০ বছর মেয়াদী মার্কিন ট্রেজারি নোটের সুদ সামান্য কমে ৪.২৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
এই প্রতিবেদনটি আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এপি-র তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস