গাজায় ইসরায়েলের আকস্মিক বোমা হামলায় নিহত ৪০, রমজানের ঈদ উৎসবে নেমেছে শোকের ছায়া।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলার ফলে সেখানকার বাসিন্দারা আবারও এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, গত মঙ্গলবার (১৮ মার্চ, ২০২৪) ভোর রাতের দিকে এই হামলা চালানো হয়, যা দীর্ঘ দুই মাস ধরে চলা যুদ্ধবিরতির অবসান ঘটায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, খান ইউনিস এবং গাজা সিটিতে ভোরে বোমা বর্ষণ শুরু হয়। এতে একটি উদ্বাস্তু শিবির, একটি হামাস-পরিচালিত কারাগার এবং আবাসিক এলাকাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভয়াবহ এই হামলায় এখন পর্যন্ত ৪০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে বহুজন।
মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে আহতদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে।
পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবে ডাক্তারদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। মানবিক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে, যেখানে খাদ্য, জল, ঔষধ এবং বিদ্যুতের তীব্র অভাব দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হামলার আগে পবিত্র রমজান মাসে গাজাবাসীর মধ্যে কিছুটা শান্তির পরিবেশ ফিরে এসেছিল। অনেক পরিবার তাদের ধ্বংস হওয়া বাড়িঘরে ফিরে এসেছিল এবং ত্রাণ সহায়তা আসায় খাদ্য ও ঔষধের সংকটও কিছুটা কমেছিল।
কিন্তু ইসরায়েল ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার পর পরিস্থিতি আবারও খারাপ হতে শুরু করে।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, “বোমা হামলায় সবকিছু যেন ধ্বংস হয়ে গেছে। চারিদিকে শুধু ধ্বংসস্তূপ আর আহত মানুষের আর্তনাদ।” নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাও অনেক।
গাজা শহরের একটি হাসপাতালের চিকিৎসক জানান, “আহতদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।”
এদিকে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজার পূর্বাঞ্চলে বাসিন্দাদের এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। এতে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা আরও বাড়ছে।
জাতিসংঘের একটি মুখপাত্র জানিয়েছেন, “বোমা হামলার আগের দিনগুলোতে সবাই এক অজানা আশঙ্কায় ছিল। শিশুরা জানতে চাইত, যুদ্ধ কি আবার শুরু হবে? এখন সেই দুঃস্বপ্ন সত্যি হয়েছে, যা সেখানকার মানুষের শেষ আশাটুকুও ভেঙে দিয়েছে।”
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস