যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো অঙ্গরাজ্যে অভিবাসন বিষয়ক একজন কর্মীকে আটকের ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, জিনেট ভিজগেরা নামের ওই নারী, যিনি আগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে বিতাড়ন এড়াতে গির্জায় আশ্রয় নিয়েছিলেন, তাকে সম্প্রতি গ্রেফতার করা হয়েছে।
অভিবাসন বিষয়ক আইনজীবীরা জানিয়েছেন, সোমবার ডেনভার এলাকার একটি টার্গেট স্টোর থেকে ভিজগেরাকে আটক করে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (ICE)।
ভিজগেরা মেক্সিকো সিটি থেকে ১৯৯৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন এবং ২০০৯ সাল থেকে বিতাড়ন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে জাল সোশ্যাল সিকিউরিটি কার্ড ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে।
যদিও তিনি দাবি করেছেন, কার্ডের নম্বরটি যে অন্য কারও, সে সম্পর্কে তিনি অবগত ছিলেন না। এই ঘটনার জেরে তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিতাড়ন প্রক্রিয়া থেকে বাঁচতে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
২০১৭ সালে বিতাড়ন এড়াতে তিনি গির্জায় আশ্রয় নেন। তার সমর্থনে এগিয়ে এসেছিলেন কলোরাডোর বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধিও।
তারা ভিজগেরাকে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ করে দিতে বিল পেশ করেছিলেন, তবে সেটি আইনে পরিণত হয়নি। ২০২০ সালে তিনি গির্জা ত্যাগ করেন এবং এরপর থেকে ভিসা পাওয়ার চেষ্টা করছিলেন, যা অপরাধের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অনুমতি দেয়।
ডেনভারের মেয়র মাইক জনস্টন এই আটকের তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি এটিকে রাজনৈতিক নিপীড়ন হিসেবে বর্ণনা করে ভিজগেরার মুক্তি এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন।
আটকের প্রতিবাদে ডেনভারের একটি আইস (ICE) ডিটেনশন সেন্টারের বাইরে বিক্ষোভ হয়েছে। পরিবার জানিয়েছে, ভিজগেরাকে এখনো সেখানে রাখা হয়েছে এবং তারা দ্রুত তাকে মুক্তি দেওয়ার জন্য আইসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ভিজগেরার আইনজীবীরা বলছেন, আইস-এর কাছে তাকে আটকের যে নির্দেশ রয়েছে, সেটি বৈধ নয়। তারা এর বিরুদ্ধে আদালতে আবেদন করেছেন এবং আইস-এর এই পদক্ষেপকে আইনের শাসনের প্রতি অবজ্ঞা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
আইনজীবীরা বলছেন, যদি আইস কোনো বৈধতা ছাড়াই ভিজগেরাকে বিতাড়িত করার চেষ্টা করে, তবে তা ন্যায়বিচারের পরিপন্থী হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ঘটনার আইনি এবং রাজনৈতিক দিকগুলো এখনো স্পষ্ট নয়। তবে অভিবাসন বিষয়ক কর্মীদের অধিকার এবং বিতাড়ন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস