গাম্বিয়ার নারীদের মধ্যে প্রচলিত ‘Taba’ নামক এক প্রকার তামাক পণ্যের ব্যবহার, যা তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। সম্প্রতি আল জাজিরায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।
জানা যায়, তামাক পাতা থেকে তৈরি এই ‘Taba’ স্থানীয় নারীদের মধ্যে যৌন আকাঙ্ক্ষা বাড়াতে এবং কিছু স্বাস্থ্যগত সুবিধা পাওয়ার আশায় ব্যবহৃত হয়। তবে চিকিৎসকরা এর স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করেছেন।
আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার নারীদের মধ্যে ‘Taba’-র ব্যবহার বহু পুরোনো। সাধারণত, এটি ধূমপান, নাক অথবা চিবানোর মাধ্যমে গ্রহণ করা হতো।
তবে, বর্তমানে কিছু নারী এই তামাক গুঁড়োর সাথে অন্যান্য রাসায়নিক দ্রব্য মিশিয়ে এর ব্যবহার করেন। তারা বিশ্বাস করেন, এর মাধ্যমে যৌন pleasure বা আনন্দ বৃদ্ধি করা সম্ভব। কেউ কেউ আবার এটিকে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করেন, যদিও এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
চিকিৎসকদের মতে, ‘Taba’ ব্যবহারের ফলে শরীরে মারাত্মক কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে যৌনাঙ্গে সংক্রমণ, জ্বালাপোড়া, চুলকানি, দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব এবং যৌন মিলনের সময় রক্তপাত।
এছাড়াও, এটি ক্যান্সার, বিশেষ করে জরায়ু এবং যোনি ক্যান্সার এর ঝুঁকি বাড়ায়। গর্ভাবস্থায় এর ব্যবহারের কারণে অকাল প্রসব, শিশুর বৃদ্ধি কমে যাওয়া এবং মৃত শিশুর জন্ম হতে পারে।
গাম্বিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ‘Taba’ ব্যবহারের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা তৈরি করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এর ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরেছে এবং নারীদের এটি ব্যবহার না করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, গাম্বিয়ার নারীদের মধ্যে ‘Taba’-র ব্যবহার বেশ ব্যাপক। ২০২৩ সালের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, জরিপে অংশ নেওয়া নারীদের মধ্যে ৬৩.২ শতাংশ বর্তমানে এই তামাক পণ্য ব্যবহার করেন।
বয়স্ক নারীদের মধ্যে এর ব্যবহার বেশি দেখা যায়। শহরের তুলনায় গ্রামের নারীরাও এটি বেশি ব্যবহার করে।
‘Taba’ তৈরি ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত নারীরা জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে এই ব্যবসা করছেন।
তাদের দাবি, এটি ব্যবহারকারীদের মধ্যে তেমন কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয় না। তবে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত গবেষণা করা প্রয়োজন।
গাম্বিয়ার সরকার তামাক ব্যবহারের ওপর কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করলেও, ‘Taba’-র ব্যবহার এখনো নিয়ন্ত্রণ করা হয়নি। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা মনে করেন, জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা