শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় টিকাকরণের গুরুত্ব অপরিসীম। সম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে, বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোতে হাম রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে, যা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
টিকাকরণের ব্যাপারে কিছু মানুষের দ্বিধা বা ভীতি এর প্রধান কারণ। এই পরিস্থিতিতে, কিভাবে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে তাদের টিকাকরণের প্রয়োজনীয়তা বোঝানো যায়, সেই বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
চিকিৎসকদের মতে, অভিভাবকদের উদ্বেগের কারণগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনা এবং তাদের নির্দিষ্ট প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়া জরুরি। অনেক সময়, টিকাকরণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে অভিভাবকদের মনে কিছু ভুল ধারণা থাকে।
এগুলো দূর করতে নির্ভরযোগ্য তথ্যের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। যেমন, টিকাকরণের ফলে জ্বর বা সামান্য ব্যথা হতে পারে, তবে গুরুতর কোনো সমস্যা সাধারণত হয় না।
অভিভাবকদের বোঝাতে চিকিৎসকেরা তাদের পুরোনো রোগীদের উদাহরণও ব্যবহার করেন। উদাহরণস্বরূপ, হাম রোগের কারণে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং এমনকি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটতে পারে।
তাই শিশুদের হাম থেকে বাঁচাতে টিকার গুরুত্ব অপরিসীম। হামে আক্রান্ত হলে শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, নিউমোনিয়া হতে পারে এবং মস্তিষ্কে প্রদাহও দেখা দিতে পারে।
এই রোগ থেকে শিশুদের বাঁচাতে হলে অবশ্যই সময় মতো টিকা দিতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অভিভাবকদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করা এবং তাদের উদ্বেগকে সম্মান জানানো প্রয়োজন। অনেক অভিভাবক, বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাওয়া ভুল তথ্যের কারণে বিভ্রান্ত হন।
এক্ষেত্রে চিকিৎসকদের উচিত ধৈর্য ধরে তাদের সঠিক তথ্য দেওয়া এবং তাদের মনে সাহস যোগানো। এছাড়া, কমিউনিটি ইমিউনিটি বা দলবদ্ধ প্রতিরোধ ক্ষমতার ধারণাটিও অভিভাবকদের বোঝানো দরকার।
যখন সমাজের একটি বড় অংশ টিকা নেয়, তখন রোগটি দ্রুত ছড়াতে পারে না, যা দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন শিশুদেরও সুরক্ষা দেয়।
বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে শিশুদের টিকাকরণের হার বাড়ানোর জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। অভিভাবকদের সচেতন করতে স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মশালা ও আলোচনা সভা আয়োজন করা যেতে পারে।
টিকাকরণের গুরুত্ব সম্পর্কে মানুষকে জানাতে গণমাধ্যম, সামাজিক মাধ্যম এবং স্থানীয় কমিউনিটির সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
টিকাকরণ শিশুদের সুস্থ ও রোগমুক্ত জীবন দিতে পারে। তাই, আপনার সন্তানের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য, টিকা সম্পর্কে কোনো দ্বিধা থাকলে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন