ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে বন্দী বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে, যেখানে উভয় দেশই বিপুল সংখ্যক যুদ্ধবন্দীকে মুক্তি দিয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যস্থতায় হওয়া এই বিনিময় প্রক্রিয়ায় ৩৭২ জন বন্দী মুক্তি লাভ করেছেন।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বুধবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ১৭৫ জন সৈন্যকে ইউক্রেন ফেরত পাঠিয়েছে। এর মধ্যে গুরুতর আহত ছিলেন ২২ জন, যাদের জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন ছিল।
অন্যদিকে, ইউক্রেনও রাশিয়ার কাছে ১৭৫ জন সৈন্যকে হস্তান্তর করেছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই বন্দী বিনিময়কে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি একে ফেব্রুয়ারি ২০২২ সালে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রায় আগ্রাসন শুরুর পর থেকে হওয়া ‘সবচেয়ে বড়’ বিনিময়গুলোর একটি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
জেলেনস্কি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন, “যুদ্ধবন্দীদের খুঁজে বের করতে এবং তাদের বিনিময়ে সহায়তার জন্য আমাদের দল যে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করেছে, আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। আমরা আমাদের সকল অংশীদার, বিশেষ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, যাদের কারণে আজকের এই বিনিময় সম্ভব হয়েছে।”
এদিকে, এই বন্দী বিনিময়ের মধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে একটি ‘খুব ভালো’ ফোনালাপ করেছেন বলে জানিয়েছেন। এর আগে তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও কথা বলেছেন।
ট্রাম্পের এই আলোচনার মূল উদ্দেশ্য ছিল যুদ্ধ বন্ধের জন্য একটি ‘যুদ্ধবিরতি’ (ceasefire) তৈরির চেষ্টা করা। ট্রাম্পের মতে, উভয় দেশের মধ্যে আলোচনা ‘প্রায় সঠিক পথে’ রয়েছে।
ট্রাম্প আরও জানান, তিনি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারকো রুবিও এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ওয়াল্টজকে আলোচনার বিস্তারিত বিবরণ প্রস্তুত করতে বলেছেন। তবে জেলেনস্কি বলেছেন, পুতিন ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন বলে যে দাবি করেছেন, তা বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
জেলেনস্কির মতে, পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের কথা বলার পরও গত রাতে ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে, বিশেষ করে জ্বালানি স্থাপনায় ১৫০টি ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়ার ছোড়া ১৪৫টি ড্রোনের মধ্যে তারা ৭২টিকে ভূপাতিত করেছে।
অন্যদিকে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইউক্রেনের ৫৭টি ড্রোন ধ্বংস করেছে। সাম্প্রতিক হামলায় ইউক্রেনের একজন নিহত হয়েছে এবং দুটি হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এছাড়াও, রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় ক্রাসনোদার অঞ্চলে একটি তেল ডিপোতে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে, যেখানে আগুন লেগে যায়।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা