পেটে অস্বস্তি? কিভাবে সুস্থ রাখবেন আপনার পরিপাকতন্ত্র।
আজকের যুগে, পেটের সমস্যা যেন অনেকের কাছেই একটি সাধারণ অভিজ্ঞতা। কারো কোষ্ঠকাঠিন্য, কারো পেট ফোলা বা গ্যাসের সমস্যা লেগেই আছে।
স্বাস্থ্য বিষয়ক একটি নতুন অভিজ্ঞতা নিয়ে সম্প্রতি কথা বলেছেন মাইক হস্কিন্স। তিনি একজন স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক এবং দীর্ঘদিন ধরে টাইপ ১ ডায়াবেটিসে (Type 1 Diabetes) ভুগছেন। তাঁর এই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে কিভাবে আমরা আমাদের পরিপাকতন্ত্রের যত্ন নিতে পারি, সেই বিষয়ে আলোকপাত করা হলো।
মাইকের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা।
মধ্য চল্লিশে এসে মাইকের পেটে প্রায়ই অস্বস্তি হতে শুরু করে। কোনো কারণ ছাড়াই পেট ফুলে যেত, যেটাকে ডাক্তারি ভাষায় ব্লোটিং (bloating) বলা হয়। এছাড়াও মাঝে মাঝে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও দেখা দেয়।
প্রথমে তিনি বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেননি। কিন্তু সমস্যা যখন বাড়তে শুরু করলো, তখন তিনি চিকিৎসকের পরামর্শ নেন।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী, তিনি প্রথমে কিছু পরীক্ষা করান। এই পরীক্ষার ফল তেমন পরিষ্কার না হওয়ায়, পরবর্তীতে তাঁকে কোলনোস্কোপি (colonoscopy) করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।
কোলনোস্কোপি হলো একটি পরীক্ষার মাধ্যমে আমাদের পরিপাকতন্ত্রের ভিতরের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা। এরপরও যখন কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না, তখন দ্বিতীয়বার কোলনোস্কোপি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কোলনোস্কোপি পরীক্ষার প্রস্তুতি।
কোলনোস্কোপির আগে কিছু প্রস্তুতি নিতে হয়, যা অনেকের কাছে বেশ কঠিন মনে হতে পারে। পরীক্ষার আগে সাধারণত কয়েক দিন ধরে বিশেষ ধরনের খাবার গ্রহণ করতে হয় এবং কিছু ওষুধ সেবন করতে হয়।
এছাড়া, পরীক্ষার আগের রাতে পেট সম্পূর্ণভাবে পরিষ্কার করার জন্য বিশেষ তরল পান করতে হয়।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এই প্রস্তুতি আরও কঠিন হতে পারে, কারণ তাঁদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। মাইকের ক্ষেত্রেও এমনটাই হয়েছিলো।
তিনি তাঁর ডায়াবেটিস বিষয়ক ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে, ইনসুলিনের মাত্রা ও খাবার সম্পর্কে কিছু পরিবর্তন এনেছিলেন।
কোলনোস্কোপি পরীক্ষার ফলাফল।
দুবার কোলনোস্কোপি করার পরেও মাইকের সমস্যার মূল কারণ জানা যায়নি। তবে পরীক্ষার সময় তাঁর কোলন থেকে দুটি ছোট পলিপ (polyp) অপসারণ করা হয়, যা পরীক্ষার পর নিরীহ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।
করণীয় এবং আমাদের শিক্ষা।
মাইকের এই অভিজ্ঞতা থেকে আমরা বুঝতে পারি, পেটের সমস্যাকে হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। শরীরে কোনো সমস্যা হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
কোলনোস্কোপির মতো পরীক্ষাগুলো আমাদের পরিপাকতন্ত্রের স্বাস্থ্য সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা সাধারণত ৪৫ বছর বয়সের পর থেকে কোলনোস্কোপি করার পরামর্শ দেন। কোষ্ঠকাঠিন্য, পেট ফোলা বা অন্য কোনো উপসর্গ দেখা দিলে, দ্রুত ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে আমরা আমাদের পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখতে পারি।
পরিশেষে, মাইকের অভিজ্ঞতা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন থাকতে হবে এবং কোনো সমস্যা হলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। আপনার পেটের কোনো সমস্যা হলে, দেরি না করে একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
তথ্যসূত্র: হেলথলাইন