মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, অভিবাসন সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিতর্কে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এবং ফেডারেল বিচারকের মধ্যে তীব্র মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। বিচারক জেমস বোয়াসবার্গ, যিনি ওয়াশিংটন ডিসি-র একটি ফেডারেল আদালতের প্রধান, ট্রাম্প প্রশাসনের একটি পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছেন, যা কিছু অ-নাগরিককে দ্রুত বহিষ্কার করার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছিল।
এই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ‘এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট’ নামের একটি আইন, যা জরুরি পরিস্থিতিতে বিদেশি নাগরিকদের বহিষ্কারের ক্ষমতা দেয়।
বিচারক বোয়াসবার্গ গত সপ্তাহে ট্রাম্প প্রশাসনের এই আইনের ব্যবহারের ওপর সাময়িকভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। এর কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত তথ্য সরবরাহ করা হয়নি এবং এই আইনের অপব্যবহার হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
কিন্তু বিচারকের নিষেধাজ্ঞার পরেও, প্রশাসন কিছু বিতাড়ন ফ্লাইট পরিচালনা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এই ঘটনায়, বিচারক বোয়াসবার্গ ক্ষোভ প্রকাশ করে সরকারের কাছে ঘটনার বিস্তারিত জানতে চান। কিন্তু বিচারকের অভিযোগ, সরকার তথ্য প্রদানে গড়িমসি করছে এবং ক্ষেত্রবিশেষে এড়িয়ে যাচ্ছে।
বিচারক প্রশাসনের আইনজীবীদেরকে এই বিষয়ে জবাবদিহি করার নির্দেশ দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা বিচারকের এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তারা বলছেন, বিচারক তার এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে কাজ করছেন এবং বৈদেশিক নীতিতে হস্তক্ষেপ করছেন।
সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “এই বিচারকের এমন কাজ করার কোনো অধিকার নেই। তারা আমাদের সরকারের কাজে হস্তক্ষেপ করছে।”
ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যেই বিচারকের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আপিল করেছে এবং তারা এটিকে সম্পূর্ণরূপে বাতিল করার জন্য আবেদন জানিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (ACLU) আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে, সরকারের পদক্ষেপের কারণে একটি সাংবিধানিক সংকট তৈরি হতে পারে।
বর্তমানে, এই মামলার শুনানি চলছে এবং আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য বিবেচনা করছে। এই মামলার চূড়ান্ত রায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতি এবং বিচার বিভাগের ক্ষমতা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন