মহিলাদের ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার শনাক্তকরণে ব্যবহৃত একটি সাধারণ রক্ত পরীক্ষার ফল কিছু ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য নাও হতে পারে। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণায় এমনটাই জানা গেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে যে, এই পরীক্ষার মাধ্যমে শ্বেতাঙ্গ নারীদের তুলনায় কৃষ্ণাঙ্গ ও আদিবাসী আমেরিকান নারীদের ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার শনাক্তকরণে বেশি সমস্যা হতে পারে। এর ফলে তাদের চিকিৎসারও বিলম্ব হতে পারে।
ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার মহিলাদের মধ্যে একটি মারাত্মক রোগ। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগটি শনাক্ত করা গেলে চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীর সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।
কিন্তু এই পরীক্ষার ফল যদি নির্ভুল না হয়, তবে তা উদ্বেগের কারণ। বিশেষ করে যখন দেখা যায় যে কিছু নির্দিষ্ট জাতিগোষ্ঠীর মহিলাদের ক্ষেত্রে এই পরীক্ষার ফল নির্ভরযোগ্যতা হারাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি নতুন গবেষণায় CA-125 নামক একটি রক্ত পরীক্ষার ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। এই পরীক্ষাটি রক্তের টিউমার মার্কারের মাত্রা পরিমাপ করে এবং এর মাধ্যমে ক্যান্সার বিশেষজ্ঞের কাছে রেফার করার প্রয়োজন আছে কিনা, তা নির্ধারণ করা হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, কৃষ্ণাঙ্গ ও আদিবাসী আমেরিকান নারীদের মধ্যে শ্বেতাঙ্গ নারীদের তুলনায় CA-125 এর মাত্রা কম থাকে। এর মানে হল, তাদের ক্যান্সার শনাক্ত করতে বর্তমান পরীক্ষার পদ্ধতি যথেষ্ট কার্যকর নাও হতে পারে।
গবেষকরা বলছেন, এই পরীক্ষার ফল বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মানুষের জন্য ভিন্ন হতে পারে। এর কারণ হিসেবে তারা কিছু জিনগত ভিন্নতার কথা উল্লেখ করেছেন, যা আফ্রিকান, ক্যারিবিয়ান, মধ্যপ্রাচ্য এবং ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান বংশোদ্ভূত মানুষের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
প্রাথমিক গবেষণায় জাতিগত তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, তবে সেই সময়ে মূলত শ্বেতাঙ্গ জনগোষ্ঠীর ওপরই পরীক্ষা চালানো হয়েছিল।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, যাদের পরীক্ষায় ফল ‘নেগেটিভ’ এসেছে, তারা ক্যান্সার শনাক্ত হওয়া রোগীদের তুলনায় গড়ে ৯ দিন পরে কেমোথেরাপি শুরু করেছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সামান্য বিলম্বও কিছু রোগীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
গবেষকরা বর্তমানে CA-125 পরীক্ষার জন্য নতুন একটি মানদণ্ড তৈরির চেষ্টা করছেন। তাদের প্রস্তাবিত নতুন পদ্ধতিতে সব জাতিগোষ্ঠীর মানুষের জন্য পরীক্ষার ফল আরও নির্ভরযোগ্য হবে এবং ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার সন্দেহ হলে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস।