ইতালির একটি ছোট্ট শহর, যেখানে এক ইউরোতে (প্রায় ১১৪ টাকার মতো) মিলছে বাড়ি!
ইতালির আব্রুজ্জো প্রদেশের পেনে শহরে পুরনো বসতি ফিরিয়ে আনতে কর্তৃপক্ষ এক অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। জনশূন্য হয়ে যাওয়া শহরটিতে নতুন করে মানুষের বসবাস নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষ পরিত্যক্ত বাড়িগুলো এক ইউরোতে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সম্প্রতি, শহরটির মেয়র গিলবার্তো পেত্রুচ্চি জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই আরও কিছু বাড়ির তালিকা প্রকাশ করা হবে।
শহরটিতে বর্তমানে প্রায় ১,২০০ মানুষের বসবাস। তবে পুরনো এই শহরটির কেন্দ্রে বসবাসকারীর সংখ্যা মাত্র ১০০০ জন।
মেয়র মনে করেন, এই ঐতিহাসিক স্থানটিকে বাঁচাতে হলে নতুন বাসিন্দাদের আকৃষ্ট করতে হবে। তাঁর মতে, বহু বছর ধরে পরিবারগুলো শহর ছেড়ে যাওয়ায় এখানকার ঐতিহাসিক কেন্দ্রটি প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়েছে।
এই প্রকল্পের আওতায়, ২০১৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ছয়টি বাড়ি বিক্রি করা হয়েছে, যার ক্রেতা ছিলেন মূলত ইতালীয় নাগরিকরা।
মেয়র জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই আরও কয়েকটি বাড়ির তালিকা প্রকাশ করা হবে। পুরনো বাড়িগুলো সাধারণত ৭৫০ থেকে ১,৩০০ বর্গফুট পর্যন্ত বিস্তৃত এবং এগুলো কয়েক তলা পর্যন্ত হতে পারে।
এই প্রকল্পের প্রধান আকর্ষণ হলো, বাড়িগুলো সংস্কার করার জন্য ক্রেতাদের কোনো অগ্রিম জামানত দিতে হবে না। কর্তৃপক্ষের মূল লক্ষ্য হলো, আগ্রহী ক্রেতাদের শহরটিতে বসবাস করতে উৎসাহিত করা।
সাধারণত, অন্যান্য অঞ্চলে এ ধরনের প্রকল্পে ২,০০০ থেকে ৫,০০০ ইউরো পর্যন্ত জামানত জমা দিতে হয়, যা সংস্কার সম্পন্ন হওয়ার পরে ফেরত পাওয়া যায়। তবে পেনে শহরে সংস্কারের কাজটি ত্বরান্বিত করতে কর্তৃপক্ষ এই জামানতের নিয়মটি শিথিল করেছে।
সংস্কারের জন্য কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সহায়তা করারও ব্যবস্থা রয়েছে। শহরটিতে একটি বিশেষ সংস্থা কাজ করছে, যারা বাড়ি সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে থাকে।
এই সংস্থার প্রকৌশলী ও বিশেষজ্ঞরা বাড়ি নির্মাণ ও সংস্কারের জন্য উপযুক্ত কর্মী খুঁজে বের করতে সাহায্য করেন। এছাড়া, কেমন হবে বাড়ির নতুন রূপ, সে সম্পর্কে ক্রেতাদের ধারণা দিতে তারা বিভিন্ন নকশা তৈরি করে থাকেন।
মেয়র জানিয়েছেন, একটি ছোট আকারের বাড়ির প্রাথমিক সংস্কারের খরচ প্রায় ২০,০০০ ইউরোর মতো হতে পারে।
পেনে শহরের ঐতিহাসিক কেন্দ্রটি তার স্থাপত্যশৈলীর জন্য সুপরিচিত। এখানে মধ্যযুগ, গথিক ও রেনেসাঁ যুগের স্থাপত্যের মিশ্রণ দেখা যায়।
শহরটি পাহাড়ের উপরে অবস্থিত হওয়ায় এখানকার আবহাওয়া বেশ মনোরম। পর্যটকদের জন্য এখানকার আকর্ষণীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে ঐতিহাসিক ফোয়ারা এবং পাথরের তৈরি পুরোনো রাস্তা।
ইতালির আরও কিছু শহরে এই ধরনের প্রকল্প চালু আছে। এর মধ্যে সিসিলির মুসোমেলি, ক্যামারাতা এবং সামবুকা উল্লেখযোগ্য।
এছাড়া সার্ডিনিয়াতেও সম্প্রতি এই ধরনের প্রকল্প শুরু হয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন