যুক্তরাষ্ট্রের ‘গোল্ডেন ডোম’: বিশাল ব্যয়ের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কতটুকু সম্ভব?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি নতুন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরির পরিকল্পনা করছে, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘গোল্ডেন ডোম’। এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে দেশকে রক্ষা করা।
ইসরায়েলের ‘আয়রন ডোম’-এর আদলে এটি তৈরি করার কথা ভাবা হচ্ছে, তবে এর পরিধি অনেক বড় হবে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন নিয়ে এখন থেকেই প্রশ্ন উঠেছে।
গোল্ডেন ডোম কী?
‘গোল্ডেন ডোম’ হলো মূলত একটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যা আমেরিকার আকাশসীমায় যেকোনো দিক থেকে আসা ক্ষেপণাস্ত্রকে প্রতিহত করতে সক্ষম হবে।
এটি তৈরি করতে পারলে, দেশের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি, শহর এবং জনগণের জীবন রক্ষা করা সম্ভব হবে।
তবে, এই ব্যবস্থা তৈরি করা অত্যন্ত কঠিন এবং ব্যয়বহুল একটি কাজ।
প্রকল্পের চ্যালেঞ্জ
এই প্রকল্পের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এর প্রযুক্তিগত জটিলতা।
দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সনাক্তকরণ, সেগুলোকে ধ্বংস করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি তৈরি করা এবং তা কার্যকরভাবে পরিচালনা করা খুবই কঠিন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের ব্যবস্থা তৈরি করতে কয়েক বছর সময় লাগতে পারে।
তাছাড়া, ক্ষেপণাস্ত্রগুলো যদি শব্দের চেয়েও বেশি গতিতে আসে, তাহলে সেগুলোকে প্রতিহত করা আরও কঠিন হবে।
অর্থনৈতিক বিবেচনা
প্রতিরক্ষা খাতে এমনিতেই বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ হয়।
‘গোল্ডেন ডোম’ তৈরির খরচ কয়েক বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
এই বিশাল ব্যয়ের কারণে অনেকে মনে করছেন, এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন কঠিন হতে পারে।
সামরিক বাজেট কমানোর কথা যখন ভাবা হচ্ছে, তখন এত বড় একটি প্রকল্পে অর্থ বিনিয়োগ করা কতটা যুক্তিযুক্ত, সেই প্রশ্নও উঠছে।
আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা প্রভাব
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি হলে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে।
যদি যুক্তরাষ্ট্র মনে করে যে তারা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে সম্পূর্ণরূপে নিজেদের রক্ষা করতে পারবে, তবে অন্য দেশগুলো তাদের পারমাণবিক অস্ত্র ভাণ্ডার বাড়াতে উৎসাহিত হতে পারে।
এর ফলে বিশ্বে অস্ত্র প্রতিযোগিতা আরও বাড়তে পারে, যা শান্তির জন্য হুমকিস্বরূপ।
যুক্তরাষ্ট্রের এই উচ্চাভিলাষী প্রকল্পের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
তবে, প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ, বিশাল খরচ এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সম্পর্কিত উদ্বেগের কারণে এর বাস্তবায়ন বেশ কঠিন বলেই মনে হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদন