যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) বর্তমানে বহুল আলোচিত জেফরি এপস্টাইন মামলার সাথে জড়িত নথিগুলো জনসমক্ষে প্রকাশের আগে সেগুলোর কিছু অংশ গোপন (redact) করার কাজে দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছে। এই কাজটি মূলত করা হচ্ছে জনসাধারণের তথ্যের অধিকার নিশ্চিত করতে এবং প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থক ও অন্যান্য সমালোচকদের মধ্যে থাকা সন্দেহ দূর করতে।
এফবিআই-এর কর্মীরা, এমনকি রাতের বেলা ১২ ঘণ্টার শিফটে কাজ করছেন, যাতে দ্রুত এই কাজটি সম্পন্ন করা যায়। মূলত, এই নথিগুলোর কিছু অংশ গোপন করার কারণ হলো, এর মধ্যে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার বিষয় রয়েছে।
ফেডারেল আইন অনুযায়ী, সংবেদনশীল তথ্যগুলো প্রকাশ করার আগে বাদ দিতে হয়। এর বাইরে, নথিগুলোতে এমন কিছু তথ্য থাকতে পারে যা প্রকাশ পেলে তদন্তের কাজে ব্যাঘাত ঘটার সম্ভাবনা থাকে।
জেফরি এপস্টাইন ছিলেন একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি যিনি শিশুদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলেন এবং কারাগারে থাকাকালীন আত্মহত্যা করেন। তার মৃত্যুর পর, তার সঙ্গে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সম্পর্ক নিয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র তত্ত্ব (conspiracy theory) তৈরি হয়।
ট্রাম্পের সমর্থকরা অভিযোগ করেন যে, সরকার এমন কিছু তথ্য গোপন করছে যা এপস্টাইনের সঙ্গে জড়িত প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মুখোশ উন্মোচন করতে পারে। জনগণের মধ্যে এই ধরনের ধারণার কারণেই অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি এপস্টাইন মামলার নথিগুলো প্রকাশ করার নির্দেশ দেন।
তবে, অনেকে মনে করেন, প্রকাশিত হতে যাওয়া নতুন নথিতে তেমন গুরুত্বপূর্ণ কোনো তথ্য নাও থাকতে পারে। এর আগে প্রকাশিত কিছু নথিতেও উল্লেখযোগ্য কিছু পাওয়া যায়নি।
তারপরও, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে তারা জনসাধারণের কাছে আরও বেশি তথ্য পৌঁছে দিতে চায়।
ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের নথি প্রকাশের পরও ষড়যন্ত্র তত্ত্বগুলো পুরোপুরি থামেনি। এমনকি, সম্প্রতি প্রকাশিত কেনেডি হত্যা সংক্রান্ত কিছু নথিতে কিছু ব্যক্তির সামাজিক নিরাপত্তা নম্বর এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ হয়ে যাওয়ায় বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেনেডি হত্যাকাণ্ডের নথিতে নতুন কোনো তথ্য নেই যা হত্যারহস্য নিয়ে প্রচলিত ষড়যন্ত্র তত্ত্বগুলোকে সমর্থন করে।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের প্রধান লক্ষ্য হলো স্বচ্ছতা আনা। যদিও সমালোচকদের একাংশ এখনো মনে করতে পারে যে, গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য গোপন করা হচ্ছে, তবে সরকারের দাবি, তারা আগের চেয়ে অনেক বেশি তথ্য প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন