বিগত কয়েক বছর ধরেই ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছিল জেনেটিক পরীক্ষার কোম্পানি, 23andMe। অবশেষে দেউলিয়া হওয়ার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে তারা।
রবিবার কোম্পানিটি জানিয়েছে, তারা চ্যাপ্টার ১১ দেউলিয়া সুরক্ষা চেয়ে আবেদন করেছে, যার ফলে তাদের ব্যবসা বিক্রির প্রক্রিয়া সহজ হবে।
কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) অ্যান ওজিস্কি পদত্যাগ করেছেন, তবে তিনি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে সদস্য হিসেবে বহাল থাকবেন।
পর্ষদের বিশেষ কমিটির চেয়ারম্যান মার্ক জেনসেন এক বিবৃতিতে বলেন, “কৌশলগত বিভিন্ন দিক বিবেচনা করার পর আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আদালতের তত্ত্বাবধানে ব্যবসা বিক্রির প্রক্রিয়াটিই আমাদের জন্য সেরা উপায়।”
২০২১ সালে এই কোম্পানি শেয়ার বাজারে প্রবেশ করে। শুরুতে এর বাজার মূল্য ছিল প্রায় ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬৩ হাজার কোটি টাকার সমান।
শেয়ার বাজারে আসার পর কিছুদিনের জন্য কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছিল, এবং এর ফলে ওজিস্কি, যিনি কোম্পানির ৪৯ শতাংশের মালিক ছিলেন, বিলিয়নেয়ার হয়েছিলেন।
কোম্পানির প্রধান পণ্য ছিল ঘরে বসে ডিএনএ পরীক্ষার কিট। এই কিট ব্যবহার করে একজন ব্যক্তি জানতে পারতেন তার শরীরে কোনো স্বাস্থ্য ঝুঁকি আছে কিনা, যেমন আলঝেইমার বা কিছু বিশেষ ধরনের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা।
কোম্পানিটি গ্রাহকদের কাছ থেকে নিয়মিত ফি আদায়ের মাধ্যমে তাদের স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল, কিন্তু সেই লক্ষ্যে তারা পৌঁছাতে পারেনি।
গত বছরের শেষের দিকে, কোম্পানিটি তাদের কর্মীসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ২০০ জন কর্মী ছাঁটাই করে এবং থেরাপি উন্নয়নের কাজ বন্ধ করে দেয়।
এর আগে, কোম্পানির সাতজন স্বতন্ত্র পরিচালক সিইও’র কৌশলগত দিক এবং কোম্পানিকে ব্যক্তিগত খাতে নেওয়ার সিদ্ধান্তের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে পদত্যাগ করেছিলেন।
বাংলাদেশে এখনো ডিএনএ পরীক্ষার ধারণা সেভাবে জনপ্রিয় নয়। তবে, এই ঘটনার মাধ্যমে বোঝা যায়, ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্যের ব্যবসা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
এই ধরনের পরীক্ষা এবং ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে আরও সচেতনতা প্রয়োজন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন