কৃত্রিম মিষ্টি সুক্রালোজ: ক্ষুধা বাড়ায়, নতুন গবেষণায় চাঞ্চল্যকর তথ্য।
আজকাল ডায়েট করার প্রবণতা বাড়ছে, তাই অনেকেই চিনিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলেন। ওজন কমাতে বাজারে উপলব্ধ বিভিন্ন কৃত্রিম মিষ্টির দিকে ঝুঁকছেন অনেকে।
কিন্তু সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, সুক্রালোজ নামক একটি কৃত্রিম মিষ্টি, যা প্রায়ই ‘চিনিমুক্ত’ খাবার ও পানীয়তে ব্যবহার করা হয়, তা আসলে শরীরের জন্য ভালোোর চেয়ে খারাপ করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণা অনুযায়ী, সুক্রালোজ গ্রহণ করলে মস্তিষ্কে এমন সংকেত যায় যা ক্ষুধা বাড়িয়ে দেয়। লস অ্যাঞ্জেলেসের সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কেক স্কুল অফ মেডিসিনের মেডিসিন ও পেডিয়াট্রিক্সের সহযোগী অধ্যাপক এবং ডায়াবেটিস ও স্থূলতা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. ক্যাটী পেইজ এই গবেষণার প্রধান ছিলেন।
তার মতে, সুক্রালোজ মস্তিষ্কের সেই অংশে সক্রিয়তা বাড়ায় যা ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে। এর ফলে ক্ষুধা বেড়ে যায়। যারা সুক্রালোজ মেশানো পানীয় পান করেছেন, তারা সাধারণ চিনি মেশানো পানীয় পানকারীদের চেয়ে প্রায় ২০ শতাংশ বেশি ক্ষুধার্ত অনুভব করেছেন।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, সুক্রালোজযুক্ত পানীয় পানের ফলে মস্তিষ্কের কিছু অংশে সংযোগ বাড়ে, যা সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে। শরীরে ইনসুলিন প্রতিরোধের (insulin resistance) সমস্যা থাকলে সুক্রালোজের কারণে ক্ষুধা আরও বাড়তে পারে।
এই গবেষণার ফলাফল আমাদের খাদ্য এবং পানীয় সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করে। বাংলাদেশেও বিভিন্ন খাদ্য ও পানীয়তে সুক্রালোজ বা অন্যান্য কৃত্রিম মিষ্টির ব্যবহার বাড়ছে। বাজারে উপলব্ধ ‘সুগার ফ্রি’ বা ‘চিনি মুক্ত’ লেবেলযুক্ত পণ্যগুলির দিকে তাকালে বিষয়টি স্পষ্ট হয়।
তাহলে উপায়?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু কৃত্রিম মিষ্টির ওপর নির্ভর না করে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। খাবারের তালিকা থেকে অতিরিক্ত চিনি এবং মিষ্টির পরিমাণ কমানো উচিত।
ফল ও সবজির মতো প্রাকৃতিক মিষ্টিযুক্ত খাবার গ্রহণ করা যেতে পারে। খাবারে মিষ্টির পরিমাণ কমাতে পারলে ধীরে ধীরে জিহ্বা সেই স্বাদের সঙ্গে মানিয়ে নেয়।
ডায়াবেটিস ও ওজন নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসকেরা সাধারণত চিনি ব্যবহারের পরিমাণ কমাতে বলেন। কিন্তু কৃত্রিম মিষ্টির ব্যবহার এক্ষেত্রে কতটা উপকারী, সে বিষয়ে এখনও বিতর্ক রয়েছে।
তাই, কৃত্রিম মিষ্টির পরিবর্তে খাবারের তালিকায় পরিবর্তন আনা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের দিকে মনোযোগ দেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
তথ্যসূত্র: সিএনএন