মহাকাশে নতুন দিগন্ত: বিটকয়েন বিনিয়োগকারীর নেতৃত্বে মেরু অঞ্চলের উদ্দেশ্যে স্পেসএক্স অভিযান।
মহাকাশ ভ্রমণের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় যোগ করে, একজন বিটকয়েন বিনিয়োগকারীর নেতৃত্বে একটি বিশেষ অভিযান সোমবার রাতে যাত্রা শুরু করেছে। এই অভিযানে অংশগ্রহণকারীরা হলেন উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর উপর দিয়ে যাওয়া প্রথম মানববাহী মহাকাশচারী দল।
ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে স্পেসএক্সের ফ্যালকন রকেটে করে এই অভিযানটি শুরু হয়।
এই অভিযানের মূল পরিকল্পনাকারী, চীন বংশোদ্ভূত মাল্টার নাগরিক, চুং ওয়াং।
তিনি তাঁর ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই মহাকাশ ভ্রমণের ব্যবস্থা করেন। ওয়াং ছাড়াও, এই অভিযানে আরও তিনজন অভিজ্ঞ অভিযাত্রী ছিলেন: নরওয়েজিয়ান চলচ্চিত্র নির্মাতা জ্যানিক মিককেলসেন, জার্মান রোবোটিক্স গবেষক রাবেয়া রোগ এবং অস্ট্রেলীয় মেরু অঞ্চলের গাইড এরিক ফিলিপস।
মেরু অঞ্চলের উপর দিয়ে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে ওয়াং জানিয়েছেন, “আমি এই অঞ্চলের দৃশ্য দেখতে এবং জ্ঞান ভাগ করে নিতে চাই।” তিনি আরও জানান, এই অভিযান তাঁর জীবনের ১০০০তম ফ্লাইট।
এর আগে তিনি বিভিন্ন ধরনের বিমানে চড়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছেন।
অভিযানটি প্রায় সাড়ে তিন দিন স্থায়ী হবে এবং এই সময়ে দলটি প্রায় ২৭০ মাইল উচ্চতা থেকে পৃথিবীর মেরু অঞ্চল প্রদক্ষিণ করবে।
এই মিশনে, অভিযাত্রীরা প্রায় দুই ডজনেরও বেশি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চালাবেন, যার মধ্যে মহাকাশে প্রথম মানুষের এক্স-রে করার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও রয়েছে।
এই অভিযানের গুরুত্ব সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে, নরওয়ের ফ্রাম জাদুঘরের পরিচালক গেইর ক্লোভার বলেন, “এই যাত্রা জলবায়ু পরিবর্তন এবং মেরু অঞ্চলের বরফ গলার বিষয়ে আরও বেশি মনোযোগ আকর্ষণ করবে।” ফ্রাম জাদুঘরটি সেই বিখ্যাত জাহাজটির স্মৃতিচিহ্ন বহন করে, যা এক শতাব্দীরও বেশি সময় আগে মেরু অঞ্চলে অভিযান চালিয়েছিল।
এই অভিযানের মাধ্যমে, মহাকাশ পর্যটনের ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো। এতদিন পর্যন্ত, মানুষজন সাধারণত পৃথিবীর নিরক্ষীয় অঞ্চলের কাছাকাছি স্থানে ভ্রমণ করত।
কিন্তু এই অভিযান প্রমাণ করে যে, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনার মাধ্যমে মহাকাশ ভ্রমণের ধারণা আরও বিস্তৃত করা সম্ভব।
স্পেসএক্সের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভবিষ্যতে সাধারণ মানুষের জন্য মহাকাশ ভ্রমণ আরও সহজলভ্য করার চেষ্টা চলছে। এই ধরনের অভিযানের ফলে, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং পর্যটনের ক্ষেত্রে নতুন নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে, যা বিশ্বজুড়ে মানুষকে উৎসাহিত করবে।
তথ্যসূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস