কবির হোসেন-কাপ্তাই।
রাঙামাটি জেলার মধ্যে অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হচ্ছে কাপ্তাই উপজেলার বড়ইছড়ি-ঘাঘড়া সড়ক। সড়কটি চারলেনে উন্নীতকরণের পরিকল্পনা করছে রাঙ্গামাটি সড়ক ও জনপদ বিভাগ কর্তৃপক্ষ।চারলেনে উন্নীতকরণ করা হলে কমবে ঝুঁকি ও দূর্ঘটনা।
এসড়ক দিয়ে রাঙামাটি -কাপ্তাই যাতায়াত ছাড়াও বান্দরবান, রাজস্থলী, খাগড়াছড়ি, এমনকি কক্সবাজার মহাসড়কেও যাতায়াত করা হয়ে থাকে।
প্রায় ৩০ কিলোমিটার এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন বাস, ট্রাক, মাইক্রো, জিপ, অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ অন্তত অর্ধশতাধিক যানবাহন চলাচল করে।
সাধারণ যানবাহন ছাড়াও বড়ইছড়ি-ঘাগড়া সড়ক দিয়ে বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসনের যাবতীয় যানবাহনও নিয়মিত চলাচল করে। তবে সড়কটি বেশ সংকীর্ণ, রয়েছে বিপদজনক একাধিক বাঁক। যেখানে গাড়ি চালাতে গিয়ে বেশ ঝুঁকিতে পড়তে হয় চালকদের। সেইসাথে সড়কটিতে কমবেশি সড়ক দুর্ঘটনা লেগেই থাকে।
বর্তমানে সড়কের আশপাশে ঝাঁড়-জঙ্গল বৃদ্ধি পাওয়ায় সড়কটি দিন দিন আরো ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে। এতে করে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার আশংকা করছেন সড়কটিতে চলাচলকারী চালক ও যাত্রীরা।
সম্প্রতি সড়কটিতে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কটি বেশ কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক রয়েছে যেখানে সতর্কতা চিহ্ন থাকলেও বেশ কয়েকটি চিহ্ন লতাপাতার জঞ্জালে দেখা যাচ্ছেনা। সেইসাথে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকগুলোতেও আশাপাশের পাহাড় থেকে নেমে আসা জঙ্গলের লতাপাতার জঞ্জালে ছেয়ে গেছে
এতে করে সড়কটি একদিকে যেমন ছোট হয়ে আসছে তেমনি সামনের দিক থেকে আসা যানবাহন অনেক সময় নজরে আসছেনা।
এছাড়া সড়কটির কিছু কিছু অংশে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে বৃষ্টি হলেই সেখানে পানি জমাট হয়ে থাকে। সড়কের কুকিমারা নামক এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কের উঁচু-নিচু অংশের পাশে ধারক দেওয়াল নির্মাণ সহ বিভিন্ন মেরামত কাজের মালামাল রাস্তার অংশে রাখাতে সড়কটি আরো ছোট হয়ে আসছে। এতে যেকোন সময় যানবাহন নিয়ন্ত্রন হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে সড়কটি কাপ্তাই -রাঙামাটি চলাচলের অন্যতম প্রধান সড়ক হওয়াতে এই দুই-লেইন এর সড়কটি অনতিবিলম্বে চারলেনে করার দাবি জানিয়ে আসছে স্থানীয় গাড়ি চালক ও যাত্রীরা।
এই সড়কে চলাচলকারী কয়েকজন সিএনজি চালকের সাথে কথা হলে তারা জানান, সড়কটি আরো বড় করা প্রয়োজন।
সড়কে চলাচলকারী কয়েকজন বাসচালক জানান, এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন আমরা রাঙামাটি থেকে বান্দরবান কিংবা রাজস্থলী যাত্রীদের নিয়ে আসা যাওয়া করি। কিন্তু সড়কটিতে গাড়ি চালাতে গিয়ে আমাদের চিন্তায় পড়তে হয়। কেননা ছোট ছোট গাড়িগুলোকে সাইট দেওয়া অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। তাছাড়া বাসের গতি এবং ব্রেক নিয়ন্ত্রন করতেও আমাদের হিমশিম খেতে হয়। তাই সড়কটি যদি আরো বড় হতো, তাহলে গাড়ি চালাতে আমাদের সুবিধা হতো।
এদিকে এই সড়কে চলাচলকারী স্থানীয় সচেতন কয়েকজন বাসিন্দা জানান, বড়ইছড়ি-ঘাঘড়া এই সড়কটি দিয়ে আমাদের প্রায় প্রতিদিনই চলাচল করতে হয়। এই সড়কটি দিয়ে আমরা চলাচল করতে গিয়ে লক্ষ্য করেছি সড়কটি এমনিতেই ছোট তার উপর আশেপাশে ঘনজঙ্গলের কারণে সড়কটি কিছু অংশ আরো ছোট হয়ে আসছে। পাশাপাশি সড়কের মেরামত কাজে জড়িত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কাজের সরঞ্জাম রাস্তায় না রেখে সড়কের থেকে একটু দুরে করে রাখলে সড়কটি আরো নিরাপদ হবে বলে আমরা আশা করছি। কারণ অনেকসময় তাদের রাখা সরঞ্জামে সড়কটি ছোট হয়ে যায় এবং দুর্ঘটনার আশংকাও থাকে। অন্যদিকে বিশ্বের অনেক উন্নত দেশসমূহ সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকে বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং সড়ক প্রশস্ত করে। বড়ইছড়ি-ঘাঘড়া সড়কেও যদি এরকম কিছু পদক্ষেপ গ্রহন করা হয় তাহলে সড়কের ঝুঁকি অনেকটা কমে আসবে। সেইসাথে সড়কে চলাচলকারী যানবাহন চালকদেরও সচেতন হয়ে গাড়ি চালানো প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। এতে সড়কে দুর্ঘটনা কমে আসবে। রাঙ্গামাটি সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা জানান
গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি আগামী ১০ বছরের মধ্যে চার লেনে করার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি আরোও জানান গুরুত্বপূর্ণ এই বড়ইছড়ি- ঘাঘড়া সড়কটি অবশ্যই চারলেনে হওয়া প্রয়োজন এবং এটি পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকগুলোতে আমরা কিছু সতর্কতা চিহ্ন সম্বলিত স্টিকার বোর্ড বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। আর সড়কের পাশে মেরামতসামগ্রী ও যন্ত্রপাতি না রাখতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবগত করা হবে। এছাড়া সহসায় সড়কটি পূর্ণাঙ্গ সংস্কার করাও হবে বলে তিনি জানান। এতে করে সড়কে ঝুঁকি অনেকটা কমে আসবে বলে আমরা মনে করছি।