পশ্চিমবঙ্গের বাইরে, নেদারল্যান্ডসের একটি থিয়েটার কোম্পানি, আন্তর্জাতিক থিয়েটার অ্যামস্টারডাম (আইটিএ), সম্প্রতি লন্ডনের ওয়েস্ট এন্ডে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে। তাদের প্রযোজনা ‘দ্য ইয়ার্স’ এবং ‘ইডিপাস’ উভয়ই অলিভিয়ার অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছে, যা ব্রিটিশ থিয়েটারের জগতে অন্যতম সম্মানজনক স্বীকৃতি।
এই সাফল্যের মাধ্যমে, আন্তর্জাতিক সংস্কৃতির মেলবন্ধন এবং নাট্যকলার নতুন দিগন্ত উন্মোচনের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে।
আইটিএ-র শৈল্পিক পরিচালক এলিন আরবো, যিনি অ্যানি এরনাক্সের উপন্যাস অবলম্বনে ‘দ্য ইয়ার্স’ নাটকটি তৈরি করেছেন, নারীদের জীবন ও অভিজ্ঞতার এক শক্তিশালী চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন। প্রথমে নেদারল্যান্ডসে সাফল্যের পর, এই নাটকটি লন্ডনের আলমেডা থিয়েটারে মঞ্চস্থ হয়, যেখানে ব্রিটিশ অভিনেতা-অভিনেত্রীরা এর সঙ্গে যুক্ত হন।
এই নাটকে অভিনয়ের জন্য অভিনেত্রী রোমলা গরাই সেরা পার্শ্ব-অভিনেত্রীর পুরস্কার লাভ করেন। পরিচালক এলিন আরবোও সেরা পরিচালকের পুরস্কার জেতেন। সমালোচকদের প্রশংসা কুড়ানো এই নাটকটি বর্তমানে ওয়েস্ট এন্ডে চলছে, এবং এর বিষয়বস্তু দর্শকদের মধ্যে গভীর প্রভাব ফেলেছে।
অন্যদিকে, রবার্ট আইকের পরিচালনায় সফোক্লিসের ক্লাসিক নাটক ‘ইডিপাস’-এর নতুন সংস্করণও দর্শকদের মন জয় করেছে। আইটিএ-র অভিনেতাদের অংশগ্রহণে এডিনবার্গ আন্তর্জাতিক উৎসবে নাটকটি মঞ্চস্থ হওয়ার পরে, লন্ডনে এটি নতুন করে উপস্থাপিত হয়, যেখানে মার্ক স্ট্রং এবং লেসলি ম্যানভিল প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন।
লেসলি ম্যানভিল সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জেতেন। এই সাফল্যের পেছনে আইটিএ-র আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং বিভিন্ন সংস্কৃতির মিশ্রণ বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
আইটিএ-র প্রাক্তন পরিচালক ইভো ভ্যান হোভ, যিনি রুফাস ওয়াইনরাইটের ‘ওপেনিং নাইট’ নাটকের ব্যর্থতার পর ব্রিটিশ দর্শকদের মধ্যে আগ্রহের অভাবের কথা বলেছিলেন, এই সাফল্যের প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের গুরুত্ব তুলে ধরেন। ব্রেক্সিটের কারণে সৃষ্ট কিছু চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, আইটিএ-র জন্য যুক্তরাজ্যে কাজ করা কঠিন হয়নি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, রেবেকা ফ্রেকনালের মতো উদীয়মান পরিচালকদেরও আইটিএ-র সঙ্গে কাজ করতে দেখা গেছে। ফ্রেকনাল বর্তমানে আইবিসেন শিল্পী-ইন-রেসিডেন্স হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন, যা প্রমাণ করে যে আইটিএ কিভাবে নতুন প্রতিভাদের উৎসাহিত করে এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করে।
আইটিএ-র এই সাফল্য প্রমাণ করে যে, বিভিন্ন সংস্কৃতি ও দেশের শিল্পীদের মধ্যে সহযোগিতা থাকলে, নাটকের জগৎ আরও সমৃদ্ধ হতে পারে। এটি শুধু একটি পুরস্কারের বিষয় নয়, বরং বিভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের মধ্যে সংযোগ স্থাপন এবং নতুনত্বের উন্মোচনের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান