গাজায় আল-আহলি হাসপাতালে ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, গুরুতর আহত রোগীসহ সবাই স্থানান্তরে বাধ্য।
গাজা উপত্যকায় অবস্থিত আল-আহলি হাসপাতালে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে এবং উত্তর গাজার একমাত্র এই হাসপাতালটি বর্তমানে পরিষেবা দেওয়ার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। আল জাজিরার সংবাদদাতাদের মাধ্যমে এই তথ্য জানা গেছে।
হামলার আগে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে রোগী ও আহতদের সরিয়ে নিতে বলেছিল। এরপরই চালানো হয় এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা। ফিলিস্তিনের বেসামরিক প্রতিরক্ষা দপ্তর (Civil Defence) জানিয়েছে, হামলার ফলে হাসপাতালের অস্ত্রোপচার কেন্দ্র এবং নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (ICU) অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মানবিক আইন অনুযায়ী, হাসপাতালগুলো বিশেষভাবে সুরক্ষিত থাকার কথা। কিন্তু ৭ অক্টোবর, ২০২৩ থেকে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি বিমান হামলায় বারবার হাসপাতালগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আল জাজিরার প্রতিবেদক তারেক আবু আজ্জুম উত্তর গাজার দেইর আল-বালাহ থেকে জানিয়েছেন, “গুরুতর অসুস্থ রোগী, যাদের মধ্যে অস্ত্রোপচার এবং জরুরি বিভাগে থাকা রোগীরাও ছিলেন, তারা আশ্রয় এবং অক্সিজেন সরবরাহ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।”
আল-আহলি হাসপাতালে আগে কাজ করা জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রাজান আল-নাহাস জানিয়েছেন, জোর করে সরিয়ে নেওয়ার সময় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ১২ বছর বয়সী এক শিশুর মাথার আঘাত ছিল।
অন্যদিকে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলছে, হাসপাতালটি “সন্ত্রাসী সংগঠন হামাসের” “কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল” কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল, তাই সেখানে হামলা চালানো হয়েছে।
গাজার মিডিয়া অফিসের পক্ষ থেকে এই হামলার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। তারা ইসরায়েলকে “একটি জঘন্য অপরাধের” জন্য দায়ী করে বলেছে, “গাজা উপত্যকার স্বাস্থ্যখাতকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে ৩৪টি হাসপাতালকে অচল করে দিয়েছে।”
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবরে এই হাসপাতালে হওয়া এক হামলায় প্রায় ৫০০ জন নিহত হয়েছিল। ইসরায়েল এই অঞ্চলে তাদের ধ্বংসযজ্ঞ অব্যাহত রেখেছে, যেখানে হাসপাতালগুলোর ওপর হামলা একটি নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা