“হ্যান্ডমেইডস টেল”-এর চূড়ান্ত সিজনের ঝলক: অত্যাচারের অন্ধকার থেকে মুক্তির পথে?
মার্গারেট অ্যাটউডের বিখ্যাত উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত জনপ্রিয় সিরিজ “হ্যান্ডমেইডস টেল”-এর (Handmaid’s Tale) চূড়ান্ত সিজন আসতে চলেছে। অত্যাচার, নিপীড়ন আর নারীর অধিকার হরণের এক ভয়ংকর চিত্র এই সিরিজে তুলে ধরা হয়েছে।
গল্পের প্রেক্ষাপট একটি ভবিষ্যৎ-আমেরিকা, যেখানে নারীদেরকে সন্তান উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করা হয়। সিরিজের ষষ্ঠ তথা শেষ সিজনে গল্পের মোড় ঘোরানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন নির্মাতারা।
সিরিজের প্রধান চরিত্র জুন’কে (জুনের ভূমিকায় এলিজাবেথ মসের অভিনয়) ঘিরে গল্পের বিস্তার ঘটেছে। আগের সিজনগুলোতে দর্শকদের হতাশ করে এমন কিছু ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর দেখা যাবে না, এমনটাই শোনা যাচ্ছে।
বরং এবার গল্প হবে দ্রুতগতির, যেখানে প্রতিশোধ ও মুক্তির স্বাদ থাকবে। নির্মাতাদের মতে, আগের সিজনগুলোতে গল্পের গতি কিছুটা ধীর ছিল, যা অনেক দর্শকের কাছে কঠিন মনে হয়েছিল। তাই এবার গল্পের বুনন হবে আরও শক্তিশালী।
নির্মাতাদের একজন, ইয়াহলিন চাং জানিয়েছেন, “এটা আমাদের জন্য একটা সুযোগ ছিল, যেখানে আমরা চরিত্রগুলোর গল্প বলার জন্য শেষবারের মতো একত্রিত হয়েছি।” শোনা যাচ্ছে, এবার জুনের চরিত্রেও আসবে পরিবর্তন।
গল্পের এই পর্যায়ে এসে চরিত্রগুলো হয়তো ভালো অথবা খারাপ—যে কোনো একটি পথ বেছে নিতে বাধ্য হবে।
সিরিজে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র রয়েছে, যাদের মধ্যে অন্যতম হলেন সেরেনা (ইয়ভোন স্ট্রাহোভস্কি)। সেরেনার চরিত্রটি নিষ্ঠুর হলেও, এই সিজনে তার মধ্যে পরিবর্তন দেখা যেতে পারে।
সম্ভবত, কোনো একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে তিনি ভালো মানুষ হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করতে পারেন। এছাড়া, আন্ট লিডিয়া নামের চরিত্রটিও দর্শকদের মনে ভীতি জাগায়।
তবে শোনা যাচ্ছে, এই চরিত্রেও পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগবে।
সিরিজের পরিচালক ও অভিনেতা, এলিজাবেথ মস জানিয়েছেন, এই কাজটি তার পেশাগত জীবনে বিশাল পরিবর্তন এনেছে। অভিনেত্রী হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি তিনি এখন পরিচালক ও প্রযোজকের দায়িত্বও পালন করছেন।
“হ্যান্ডমেইডস টেল”-এর গল্প নারী অধিকারের প্রেক্ষাপটে তৈরি করা হয়েছে। ২০১৭ সালে সিরিজটি যখন প্রথম মুক্তি পায়, তখন #MeToo আন্দোলন বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।
পরবর্তীতে, আমেরিকায় “রো বনাম ওয়েড” মামলার রায় বাতিল হওয়ার ঘটনাও এই সিরিজের সঙ্গে প্রাসঙ্গিকতা তৈরি করেছে।
অভিনেতা ব্র্যাডলি হুইটফোর্ড মনে করেন, “এই ধরনের একটি সিরিজ প্রতিরোধের গুরুত্ব তুলে ধরে।” নির্মাতারা গল্পের মাধ্যমে সমাজের বাস্তবতাকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।
তথ্যসূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস