মার্টি: সত্তরের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়েও ভালোবাসার গল্প।
সত্তর বছর আগে মুক্তি পাওয়া “মার্টি” সিনেমাটি আজও দর্শকদের মন জয় করে চলেছে। অস্কারজয়ী এই সিনেমাটি একজন সাধারণ মানুষের ভালোবাসার গল্প বলে, যা আজও মানুষকে নাড়া দেয়।
১৯৫৫ সালে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমায় অভিনেতা আর্নেস্ট বোরগাইন ছিলেন প্রধান চরিত্রে। ব্রঙ্কসের এক মাংস বিক্রেতা মার্টি’র চরিত্রে অভিনয় করে তিনি দর্শক ও সমালোচকদের মন জয় করেছিলেন।
মার্টির চরিত্রে বোরগাইন-এর অভিনয় ছিল অসাধারণ। মার্টি একজন লাজুক, একা মানুষ, যিনি ভালোবাসার জন্য আকুল হয়ে আছেন। সমাজের চোখে তিনি অবিবাহিত, তাই একাকীত্ব যেন তার সঙ্গী।
সিনেমায় দেখানো হয়, কিভাবে মার্টি ক্লারা নামের এক নারীর সঙ্গে পরিচিত হন এবং তাদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ক্লারা চরিত্রে অভিনয় করেছেন বেটসি ব্লেয়ার।
ডেলবার্ট ম্যানের পরিচালনায় নির্মিত এই সিনেমাটি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র, শ্রেষ্ঠ অভিনেতা সহ মোট চারটি বিভাগে অস্কার জয় করে। শুধু তাই নয়, কান চলচ্চিত্র উৎসবেও এটি স্বর্ণ পাম জয় করে।
সিনেমাটির চিত্রনাট্য রচনা করেছেন প্যাডি চেয়েফস্কি।
মার্টির গল্পে সমাজের কিছু দিক তুলে ধরা হয়েছে, যা আজও প্রাসঙ্গিক। একাকীত্ব, ভালোবাসার গুরুত্ব, এবং সমাজের চোখে পিছিয়ে পড়া মানুষের টিকে থাকার লড়াই—এসব বিষয় সিনেমাটিকে বিশেষভাবে আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
“মার্টি” সিনেমাটি প্রমাণ করে, ভালোবাসার গল্প সবসময়ই মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নেয়, তা যে কোনো সময়েই হোক না কেন।
“মার্টি” সিনেমার সাফল্যের কারণ হলো এর গল্প বলার ধরন। সাদামাটা মানুষের জীবনযাত্রা, তাদের চাওয়া-পাওয়া, আর সমাজের চোখে তাদের অবস্থান—এসব বিষয় এতটাই স্বাভাবিকভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে যে, দর্শক খুব সহজেই এর সঙ্গে নিজেদের মেলাতে পারে।
সিনেমার চরিত্রগুলো আমাদের আশেপাশের মানুষের মতোই—তাদের দুর্বলতা আছে, আবার ভালোবাসার জন্য তাদের আকুলতাও রয়েছে।
“মার্টি”-র গল্প শুধু একটি ভালোবাসার গল্প নয়, বরং এটি সমাজের কিছু কঠিন বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি। যারা সমাজের চোখে ‘নিঃসঙ্গ’ তাদের লড়াইয়ের গল্প এটি।
যারা ভালোবাসার জন্য অপেক্ষা করে, তাদের সাহস জোগায় এই সিনেমা। “মার্টি” তাই একটি ক্লাসিক, যা সময়ের সীমানা পেরিয়ে আজও দর্শকদের হৃদয়ে বেঁচে আছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান