সোশ্যাল মিডিয়ার জগতে, যেখানে প্রতিদিন নতুন নতুন মুখ আসে, সেখানে ক্লডিয়া সুলেউস্কি নামের একজন তরুণী, যিনি ২০০৯ সালে ইউটিউবে যাত্রা শুরু করেছিলেন, তাঁর পথচলা আজও অনেকের কাছে অনুপ্রেরণা। ১৩ বছর বয়সে যখন তিনি ভিডিও তৈরি শুরু করেন, তখন ইন্টারনেটের জগৎটা আজকের মতো ছিল না।
ইউটিউবাররা তখন কোনো প্রত্যাশা ছাড়াই, নিছক আনন্দের জন্য ভিডিও বানাতেন। ক্লডিয়ার ক্ষেত্রেও তাই ছিল, তিনি কোনো রাখঢাক ছাড়াই তাঁর মেকআপ টিউটোরিয়াল থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত জীবনের নানা দিক তুলে ধরতেন।
শুরুর দিকে, ক্লডিয়া ‘বিয়ন্ডবিউটিস্টার’ নামে পরিচিত ছিলেন, কারণ নিজের আসল নামটা গোপন রাখতে চেয়েছিলেন। সেই সময়ের ইন্টারনেট ছিল অনেকটা অপরিচিতদের জগৎ-এর মতো, তাই নিজের পরিচয় গোপন রাখাটা স্বাভাবিক ছিল।
পরে, যখন অন্যান্য ইউটিউবারদের আসল নাম প্রকাশ্যে আনতে দেখেন, তখন তিনি ভ্যালেন্টাইন’স ডে-তে তাঁর আসল নাম জানান— ক্লডিয়া।
আজ, ২৯ বছর বয়সে ক্লডিয়া সেই দিনগুলোর কথা স্মরণ করে বলেন, সেই সময়ের ইউটিউব ছিল অনেক বেশি নিরাপদ এবং সাধারণ।
এখনকার মতো এত দীর্ঘ ভিডিও বা ব্যক্তিগত জীবনের খুঁটিনাটি সেখানে দেখা যেত না।
ক্লডিয়া তাঁর ইউটিউব যাত্রাটিকে সাফল্যের মূল চাবিকাঠি হিসেবে চিহ্নিত করেন, কারণ তিনি নিয়মিত ভিডিও আপলোড করেছেন এবং সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন।
শুরুতে, ক্লডিয়া তাঁর বাবা-মাকে ইউটিউবে কাজ করার কথা জানাননি, কারণ তিনি তাঁদের প্রতিক্রিয়া নিয়ে সন্দিহান ছিলেন।
পরে যখন তাঁর মা তাঁর একটি ভিডিও দেখেন, তখন তিনি বিষয়টি স্বীকার করেন। ক্লডিয়া তাঁর বাবা-মায়ের সমর্থনকে অত্যন্ত মূল্যবান মনে করেন। তাঁদের উৎসাহের কারণেই তিনি এই পথে এতদূর আসতে পেরেছেন।
তবে, সময়ের সাথে সাথে ক্লডিয়া অনলাইনে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেছেন।
তিনি এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি অনুসরণ করেন: কোনো বিশেষ মুহূর্তে ক্যামেরা হাতে নেওয়ার বদলে, সেই মুহূর্তটাকে উপভোগ করা উচিত। তাঁর মতে, কোনো ঘটনার গুরুত্ব নষ্ট না করে, স্বাভাবিকভাবে সেই মুহূর্তের সাক্ষী থাকাটাই আসল।
তিনি মনে করেন, অনলাইনে কিছু পোস্ট করার আগে, ব্যক্তিগত পরিসরের বিষয়ে সচেতন থাকাটা খুবই জরুরি। কারণ একবার কিছু পোস্ট করলে, সেটির ওপর মানুষের নিজস্ব মতামত তৈরি হবেই।
বর্তমানে ক্লডিয়া একজন সফল কনটেন্ট ক্রিয়েটর এবং তাঁর নিজস্ব একটি সৌন্দর্য বিষয়ক ব্র্যান্ডও রয়েছে।
জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী ফিনিয়াস ও’কনেলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক রয়েছে। ক্লডিয়ার এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে কঠোর পরিশ্রম, নিজের প্রতি বিশ্বাস এবং ব্যক্তিগত গোপনীয়তার প্রতি সম্মান।
তথ্যসূত্র: পিপলস