ফরাসি চলচ্চিত্র নির্মাতা অ্যাগনেস ভার্দা, যিনি একাধারে ছিলেন আলোকচিত্রীও, তাঁর প্যারিসের ছবি নিয়ে একটি বিশেষ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। প্যারিসের কার্নাভালেত জাদুঘরে (Musée Carnavalet) “আঁগনেস ভার্দার প্যারিস, এখানে এবং ওখানে” শীর্ষক এই প্রদর্শনীতে ভার্দার আলোকচিত্রকর্মের প্রাথমিক পর্যায় তুলে ধরা হয়েছে।
ভার্দা তাঁর কাজের মাধ্যমে প্যারিসের জীবন এবং শিল্পের প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তুলেছিলেন।
ভার্দা, যিনি ২০১৯ সালে ৯০ বছর বয়সে মারা যান, বহু প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। প্রথমে তিনি একজন আলোকচিত্রী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।
এরপর ১৯৬২ সালে ‘ক্লিও ফ্রম ফাইভ টু সেভেন’ (Cléo from 5 to 7) চলচ্চিত্র নির্মাণের মাধ্যমে পরিচালক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। শুধু তাই নয়, জীবনের শেষ বয়সে তিনি বিভিন্ন আর্ট ইন্সটলেশন তৈরি করে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পান।
তাঁর নির্মিত তথ্যচিত্রগুলিও (documentaries) বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হয়েছিল।
ভার্দার জন্ম আরলেত ভার্দা হিসেবে, কিন্তু পরে তিনি অ্যাগনেস নামেই পরিচিত হন। শিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশের আগে তিনি প্যারিসের ল্যুভর আর্ট স্কুলে (Louvre art school) ভর্তি হন এবং ফটোগ্রাফি নিয়ে পড়াশোনা করেন।
প্যারিসের ১৪ নম্বর অ্যারোন্ডিসমেন্টের (arrondissement) রুয়ে দাগেরে-তে (Rue Daguerre) অবস্থিত তাঁর স্টুডিও এবং বাসস্থান ছিল শিল্পের এক অসাধারণ কেন্দ্র। এই জায়গাতেই তিনি প্রায় ৭০ বছর বসবাস করেছেন।
তাঁর বাড়িতে বন্ধু, শিল্পী, এবং স্বজনদের আনাগোনা ছিল। ভার্দার কাজের কেন্দ্রবিন্দু ছিল মানুষ ও মানুষের জীবন। তিনি তাঁর ক্যামেরায় প্যারিসের সাধারণ মানুষের জীবনকে ফুটিয়ে তুলেছেন।
আলোকচিত্রের পাশাপাশি, ভার্দা চলচ্চিত্রের প্রতিও আকৃষ্ট হন। ১৯৫৪ সালে তিনি তাঁর প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র ‘লা পোঁত কুর্ত’ (La Pointe Courte) নির্মাণ করেন।
এই ছবিতে তাঁর বন্ধু ও সহকর্মীরা তাঁকে সহযোগিতা করেছিলেন। তাঁর কাজের ধারা ফরাসি ‘নবতরঙ্গ’ (French New Wave) চলচ্চিত্রের ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল।
ভার্দা সব সময়েই একজন শিল্পী হিসেবে নিজের স্বাধীনতা বজায় রেখেছেন। তিনি ছবি, চলচ্চিত্র, এবং অন্যান্য মাধ্যমে তাঁর সৃজনশীলতাকে প্রকাশ করেছেন। তাঁর কাজ প্রমাণ করে যে, শিল্পী হিসেবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত মৌলিক এবং জীবন সম্পর্কে তাঁর আগ্রহ ছিল সীমাহীন।
প্রদর্শনীটি আগামী ২৪শে আগস্ট পর্যন্ত চলবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান