মহাকাশ ভ্রমণে নারীদের জয়জয়কার, ব্লু অরিজিনের ফ্লাইটে কেটি পেরি, গেইল কিং এবং লরেন সানচেজ।
মহাকাশ পর্যটনের জগতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে, জেফ বেজোসের কোম্পানি ব্লু অরিজিন সম্প্রতি একটি বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করেছে। এই ফ্লাইটে ছিলেন বিখ্যাত ব্যক্তিরা, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন লরেন সানচেজ (বেজোসের বাগদত্তা), জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী কেটি পেরি এবং খ্যাতিমান উপস্থাপিকা গেইল কিং।
টেক্সাসের মরুভূমি থেকে উৎক্ষেপণ করা নিউ শেপার্ড রকেটটি ছিল এই অভিযানের মূল আকর্ষণ। প্রায় ১০ মিনিটের এই সংক্ষিপ্ত ভ্রমণে যাত্রীরা পৃথিবীর আকর্ষণ থেকে মুক্তি পেয়ে মহাকাশের শূন্য মাধ্যাকর্ষণ অনুভব করেন। লরেন সানচেজের ইচ্ছাতেই এই ফ্লাইটে নারীদের প্রাধান্য দেওয়া হয়, যা নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
ফ্লাইটে কেটি পেরি, গেইল কিংয়ের সাথে ছিলেন চলচ্চিত্র প্রযোজক কেরিয়ানে ফ্লিন, প্রাক্তন নাসা প্রকৌশলী এবং বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসারে কাজ করা আইশা বোয়ে, এবং অন্যান্য নক্ষত্রের চারপাশে গ্রহ নিয়ে গবেষণা করা বিজ্ঞানী আমান্ডা নিউয়েন। মহাকাশে পৌঁছে, পৃথিবীকে অন্যরকম রূপে দেখে অভিভূত হয়ে কেটি পেরি গেয়ে ওঠেন ‘হোয়াট এ ওয়ান্ডারফুল ওয়ার্ল্ড’।
মহাকাশ ভ্রমণে নারীদের অংশগ্রহণ এখনো বেশ সীমিত। ১৯৬৩ সালে ভ্যালেন্টিনা তেরেস্কোভা প্রথম নারী হিসেবে মহাকাশে পা রেখেছিলেন। তারপর থেকে, মহাকাশে যাওয়া মানুষের মধ্যে নারীর সংখ্যা ১৫ শতাংশের বেশি নয়। লরেন সানচেজ মনে করেন, এই ফ্লাইট তরুণ-তরুণীদের, বিশেষ করে নারীদের, স্বপ্ন দেখতে এবং সেই স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে যেতে উৎসাহিত করবে।
এই ফ্লাইটের মাধ্যমে ব্লু অরিজিন আবারও প্রমাণ করলো, মহাকাশ ভ্রমণ এখন আর শুধু পেশাদার নভোচারীদের একচেটিয়া নয়। ধনী এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিরাও এখন এই সুযোগ পাচ্ছেন। এর আগে, অভিনেতা উইলিয়াম শ্যাটনার এবং প্রাক্তন ফুটবল খেলোয়াড় মাইকেল স্ট্রাহান সহ আরও অনেকে এই কোম্পানির ফ্লাইটে চড়েছেন।
ব্লু অরিজিনের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, যা বাণিজ্যিক মহাকাশ ভ্রমণের ভবিষ্যৎকে আরও উজ্জ্বল করে। এই ধরনের অভিযান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতিতে যেমন সহায়তা করে, তেমনি মানুষকে নতুন দিগন্তের স্বপ্ন দেখতেও উৎসাহিত করে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস।