বিখ্যাত অভিনেত্রী ওলিভিয়া উইলিয়ামস সম্প্রতি তার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত এক কঠিন অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন, যা অনেকের জন্যই শিক্ষণীয় হতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকার পরেও সঠিক রোগ নির্ণয় না হওয়ায় তিনি বর্তমানে আর ক্যান্সার মুক্ত হতে পারবেন না।
এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি কিভাবে রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে ভুলভ্রান্তি হয়েছে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানান।
২০১৮ সালে, ৪৬ বছর বয়সে উইলিয়ামসের প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সার ধরা পরে। এর আগে, বিগত চার বছর ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন এবং বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা অনুভব করতেন।
শরীরের দুর্বলতা, ক্লান্তি এবং প্রায়ই ডায়রিয়ার মতো সমস্যা ছিল তার। তিনি জানান, রোগ নির্ণয়ের জন্য তিনি তিনটি ভিন্ন দেশে দশ জন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েছিলেন।
কিন্তু শুরুতে তার রোগ নির্ণয় করতে অনেক দেরি হয়। ডাক্তাররা প্রথমে তাকে লুপাস, আইবিএস (IBS) এবং মেনোপজের মতো সমস্যা হয়েছে বলে জানান।
পরে লস অ্যাঞ্জেলেসের একজন চিকিৎসক তার প্যানক্রিয়াসে একটি বিরল টিউমার (VIPoma) শনাক্ত করেন।
উইলিয়ামস জানান, সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় না হওয়ায় তার ক্যান্সার শরীরে ছড়িয়ে পরে, বিশেষ করে লিভারে। ক্যান্সারের চিকিৎসা হিসেবে তিনি বর্তমানে ‘মাইক্রোওয়েভ অ্যাবলেশন’ পদ্ধতির সাহায্য নিচ্ছেন।
এই পদ্ধতিতে শরীরের ক্যান্সার কোষগুলোকে ধ্বংস করার চেষ্টা করা হয়। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময় খারাপ খবরগুলো শুনে তিনি হতাশ হন, কিন্তু এরপরও তিনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
তবে, উইলিয়ামস শুধুমাত্র নিজের কষ্টের কথা জানানোর জন্য এই বিষয়ে কথা বলেননি। তিনি চান, যাতে এই ধরনের পরিস্থিতি অন্য কারো জীবনে না আসে।
তাই তিনি প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সার নির্ণয়ের জন্য একটি সহজ পরীক্ষার ব্যবস্থা করার ওপর জোর দিচ্ছেন। তার মতে, এই ক্যান্সার খুব দ্রুত ছড়িয়ে পরে এবং আক্রান্ত ব্যক্তির জীবন কেড়ে নেয়।
তাই প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ সনাক্তকরণ খুবই জরুরি।
উইলিয়ামস বর্তমানে ‘প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সার ইউকে’ নামের একটি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে এই রোগের বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছেন। তিনি মনে করেন, যদি সময় মতো রোগ নির্ণয় করা যেত, তাহলে হয়তো তার জীবন অন্যরকম হতে পারতো।
এই কঠিন সময়েও তিনি তার শরীরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং নিয়মিত যোগাভ্যাস করেন। তিনি বলেন, শরীরকে সুস্থ রাখতে পারাটা একটা ‘মিরাকল’।
বাংলাদেশেও ক্যান্সার একটি গুরুতর সমস্যা। এখানেও অনেক মানুষ দেরিতে রোগ সনাক্তকরণের শিকার হন।
তাই, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং রোগ সম্পর্কে সঠিক সময়ে ধারণা রাখা খুবই জরুরি।
তথ্য সূত্র: পিপল