ব্রিটিশ জিগস পাজল চ্যাম্পিয়নশিপ: বুদ্ধির খেলা আর বন্ধুত্বের মেলবন্ধন
বিশ্বজুড়ে মানুষের মধ্যে পাজল বা ধাঁধার প্রতি আগ্রহ বেড়েই চলেছে। নিছক অবসর কাটানো থেকে শুরু করে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ানো— এর নানা দিক রয়েছে।
সম্প্রতি, যুক্তরাজ্যের নিউমার্কেটে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘ব্রিটিশ জিগস পাজল চ্যাম্পিয়নশিপ’। এই প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন স্থান থেকে আসা প্রতিযোগীগণ তাদের বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেন।
প্রতি বছর এই চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিতে সারা বিশ্ব থেকে মানুষজন এসে ভিড় করেন। এই বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে ‘এলিট’ বিভাগে ছিল এক হাজার টুকরোর পাজল মেলানোর প্রতিযোগিতা। যেখানে বিজয়ী হয়েছেন সারা মিলস।
তিনি ১ ঘণ্টা ৫২ মিনিটে পাজলটি সম্পন্ন করেন, যা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য।
সাধারণত, এই ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া বেশ কঠিন। এমনকি যারা নিয়মিত পাজল করেন, তাদেরও বেশ বেগ পেতে হয়। প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া এক ব্যক্তি জানান, তিনি এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার আগে খুব একটা পাজল করতেন না।
কিন্তু চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণের পর তিনি এর গুরুত্ব অনুভব করেন।
এই প্রতিযোগিতার আয়োজক জ্যানেট রামসে-হেলি জানান, বন্ধুকে নিয়ে আইল অফ ওয়াইটের একটি পাজল প্রতিযোগিতায় গিয়ে তার এই ধরনের আয়োজন করার কথা মাথায় আসে। এরপর তারা নিউমার্কেটে এই প্রতিযোগিতার সূচনা করেন। সময়ের সাথে সাথে এর জনপ্রিয়তা বেড়েছে এবং বর্তমানে এটি বিশ্বজুড়ে পরিচিতি লাভ করেছে।
পাজল শুধু একটি খেলা নয়, এটি একটি দারুণ সামাজিক অভিজ্ঞতাও বটে। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীরা একে অপরের সাথে পরিচিত হন, বন্ধু তৈরি করেন এবং তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন।
বিজয়ীদের পাশাপাশি, অংশগ্রহণকারীরাও এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে আনন্দিত হন। তাদের মতে, এখানে আসার মূল উদ্দেশ্য হলো— অন্যদের সঙ্গে মিশে যাওয়া এবং একই ধরনের আগ্রহের মানুষদের সঙ্গে সময় কাটানো।
২০২২ সালে যুক্তরাজ্যে প্রায় ২৪ মিলিয়ন পাউন্ডের পাজল বিক্রি হয়েছে, যা বাংলাদেশি টাকায় হিসাব করলে কয়েক’শ কোটি টাকার বেশি। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৮ সাল নাগাদ এই ব্যবসার আরও প্রসার ঘটবে।
প্রতিযোগিতায় যুগল বিভাগে পিটার এবং নিকি থমাস ১ ঘণ্টা ৫ মিনিটে পাজল সম্পন্ন করে প্রথম স্থান অর্জন করেন। তারা জানান, পাজল মেলানোর সময় তারা একে অপরের সঙ্গে কৌশল বিনিময় করতেন।
পাজল খেলার মাধ্যমে মানুষের একাগ্রতা বাড়ে, যা মনকে শান্ত রাখতে সহায়ক। এছাড়া, এটি স্মৃতিশক্তি বাড়াতে এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
তাই, পাজল শুধু একটি খেলা নয়, এটি একটি সুস্থ জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশও বটে।
তথ্য সূত্র: The Guardian