প্রিন্স উইলিয়াম ও কেট মিডলটন, ওয়েলসের যুবরাজ ও যুবরানী, ইস্টার সানডে’তে রাজ পরিবারের পরিবর্তে কেটের বাবা-মায়ের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন। এই ঘটনায় ব্রিটেনের রাজ পরিবারে কিছুটা ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে।
গত ২০শে এপ্রিল, রবিবার, উইন্ডসর ক্যাসেলের সেন্ট জর্জেস চ্যাপেলে ইস্টার মাটিনস সার্ভিসে কিং চার্লস, কুইন ক্যামিলা এবং রাজ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তবে প্রিন্স উইলিয়াম ও প্রিন্সেস অফ ওয়েলস, তাদের তিন সন্তান – প্রিন্স জর্জ, প্রিন্সেস শার্লট ও প্রিন্স লুইকে নিয়ে উইকেন্ড কাটাতে নরফোক-এ যান, যেখানে তাদের একটি বাড়ি আছে।
হ্যালো! ম্যাগাজিনের খবর অনুযায়ী, উইলিয়াম, কেট এবং তাদের সন্তানরা ইস্টার সানডে’তে কেটের বাবা-মা, ক্যারোল ও মাইকেল মিডলটনের সঙ্গে একটি চার্চে যান। জানা যায়, তারা সকলে মিলে স্যান্ড্রিংহাম গ্রামের সেন্ট মেরী ম্যাগডালিন চার্চে সকাল ১১টার সার্ভিসে অংশ নেন, যেখানে রাজ পরিবার সাধারণত ক্রিসমাসের সময় একত্রিত হন। চার্চের বাইরে অপেক্ষারত সকলে ক্যানন পল উইলিয়ামস-এর কাছ থেকে হট ক্রস বান গ্রহণ করেন।
৪২ বছর বয়সী প্রিন্স অফ ওয়েলস এবং ৪৩ বছর বয়সী প্রিন্সেস অফ ওয়েলস আগেই জানিয়েছিলেন যে, তারা ইস্টার উপলক্ষে রাজ পরিবারের সঙ্গে মিলিত হবেন না। এর আগেও তারা ছুটির দিনে কেটের পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন। ২০১৬ সালের ক্রিসমাসেও উইলিয়াম ও কেট, রাজ পরিবারের জমায়েতে যোগ না দিয়ে, কেটের শৈশবের কাছাকাছি অবস্থিত বাকলবেরিতে তার বাবা-মা ও ভাই-বোনদের সঙ্গে একটি চার্চে যান। সে সময় প্রিন্স জর্জ ও প্রিন্সেস শার্লটও তাদের সঙ্গে ছিল। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে প্রিন্স লুইয়ের জন্ম হয় এবং ২০২২ সালের ক্রিসমাসে তিনি প্রথমবার সকলের সঙ্গে মিলিত হন।
প্রিন্স উইলিয়াম মিডলটন পরিবারের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখেন। কেটের ক্যান্সার চিকিৎসার সময়েও তিনি এপ্রিল মাসে ক্যারোলের সঙ্গে একটি পাব-এ গিয়েছিলেন।
মিডলটন পরিবার উইন্ডসরে প্রিন্স ও প্রিন্সেস অফ ওয়েলসের প্রধান বাসভবনের কাছেই থাকেন এবং প্রায়ই তাদের নাতি-নাতনিদের সঙ্গে সময় কাটান। তারা প্রায়ই জর্জ, শার্লট ও লুইকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যান। রাজ পরিবারের এক ঘনিষ্ঠ সূত্র গত বছর জানিয়েছিল, “তাদের নাতি-নাতনীদের বেড়ে ওঠায় কেটের বাবা-মা সবসময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
যদিও কেট ও উইলিয়াম বিগত বছরগুলোতে রাজ পরিবারের ইস্টার সানডে’র অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন, তবে গত বছর তারা এই অনুষ্ঠানে যাননি। কারণ, প্রিন্সেস কেটের ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশিত হয়েছিল। এর আগে ২০২৩ সালে তারা শেষবার রাজ পরিবারের সঙ্গে ইস্টার উদযাপন করেছিলেন, যেখানে প্রিন্স লুই প্রথমবার যোগ দেয়। তার আগের বছর প্রিন্স জর্জ ও প্রিন্সেস শার্লটও প্রথমবারের মতো রাজকীয় ইস্টার অনুষ্ঠানে অংশ নেয়।
প্রিন্স উইলিয়াম ছোটবেলা থেকেই সেন্ট জর্জেস চ্যাপেলে ইস্টার সানডে’তে রাজ পরিবারের সঙ্গে চার্চে যেতেন। তবে কেট ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯, ২০২২ এবং ২০২৩ সালে – মোট পাঁচবার এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। উল্লেখ্য, কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে রাজ পরিবার প্রকাশ্যে ইস্টার উদযাপন করেনি।
২০১৪ সালে, উইলিয়াম ও কেট অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড সফরে থাকায়, সেখানকার সেন্ট অ্যান্ড্রুজ ক্যাথিড্রালে ইস্টার সানডে’র চার্চে অংশ নিয়েছিলেন।
রবিবার ইস্টার অনুষ্ঠানে প্রিন্স ও প্রিন্সেস অফ ওয়েলসের অনুপস্থিতিতে কিং চার্লস ও কুইন ক্যামিলাসহ অন্যান্য রাজ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রিন্সেস অ্যান, তার স্বামী স্যার টিমোথি লরেন্স, প্রিন্স অ্যান্ড্রু, তার প্রাক্তন স্ত্রী সারা ফার্গুসন, প্রিন্স এডওয়ার্ড এবং তার স্ত্রী সোফি, ডিচেস অফ এডিনবার্গ-ও যোগ দেন।
প্রিন্সেস মার্গারেটের দুই সন্তান, আর্ল অফ স্নোডন ও লেডি সারাহ, তাদের স্বামী ডেভিড চ্যাটো’র সঙ্গে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। রাজ পরিবারের নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে প্রিন্স অ্যান্ড্রু’র দুই কন্যা, প্রিন্সেস বিয়াট্রিস ও প্রিন্সেস ইউজেনির সঙ্গে তাদের স্বামীরাও এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। প্রিন্স এডওয়ার্ডের পুত্র, জেমস, আর্ল অফ ওয়েসেক্সও তার বাবা-মায়ের সঙ্গে চার্চে যান।
তথ্য সূত্র: পিপলস