গ্যারি ওল্ডম্যান, বিশ্বখ্যাত এই অভিনেতা, সম্প্রতি স্যামুয়েল বেকেটের বিখ্যাত নাটক ‘ক্র্যাপ’স লাস্ট টেপ’-এ এক অসাধারণ অভিনয় করেছেন। ইয়র্ক থিয়েটার রয়ালে মঞ্চস্থ হওয়া এই নাটকে ওল্ডম্যানের অভিনয় দর্শকদের মন জয় করেছে, সমালোচকদের প্রশংসাও কুড়িয়েছে।
এই নাটকের মাধ্যমে তিনি যেন পুরনো মঞ্চে ফিরে এসেছেন, কারণ ১৯৭৯ সালে এখানেই তিনি তার পেশাদার মঞ্চ জীবন শুরু করেছিলেন।
‘ক্র্যাপ’স লাস্ট টেপ’ মূলত এক বৃদ্ধ লেখকের গল্প, যিনি তার জীবনের শেষ প্রান্তে এসে অতীতের স্মৃতি হাতড়ান। ৬৯ বছর বয়সী ক্র্যাপ প্রতি বছর টেপ রেকর্ডারে তার জীবনের কথা রেকর্ড করেন।
এই নাটকে ওল্ডম্যান একাই অভিনয় করেছেন, এবং তিনিই এর পরিচালক ও সেট ডিজাইনার। একা হাতে এত বড় একটা কাজ করা সত্ত্বেও, নাটকটি দর্শকদের হতাশ করেনি, বরং এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা দিয়েছে।
নাটকের মঞ্চসজ্জা ছিল খুবই আকর্ষণীয়। ক্র্যাপের অতীতের স্মৃতিচিহ্ন – বই, ফাইল, বাক্স – দিয়ে তার চারপাশটা সাজানো হয়েছিল। সেট ডিজাইন দেখে যেন বিখ্যাত লেখক স্যামুয়েল বেকেটের ‘হ্যাপি ডেজ’-এর কথা মনে পড়ে যায়।
এখানেও ক্র্যাপ যেন তার জীবনের জালে আবদ্ধ। ওল্ডম্যান এই চরিত্রে এতটাই সাবলীল ছিলেন যে, দর্শকদের তিনি মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছিলেন।
ওল্ডম্যানের কণ্ঠস্বরের গভীরতা এবং তার বাচনভঙ্গি দর্শকদের বিশেষভাবে আকৃষ্ট করেছে। তিনি যখন টেপে তার তরুণ বয়সের কথা শোনেন, তখন যেন এক ভিন্ন জগতের সৃষ্টি হয়।
অন্যদিকে সেই অতীতের প্রতি এক গভীর বেদনা – এই দুইয়ের মিশ্রণে চরিত্রটি আরও জীবন্ত হয়ে উঠেছে।
আলোর ডিজাইন করেছেন ম্যালকম রিপেথ এবং শব্দ পরিকল্পনায় ছিলেন টম স্মিথ। তাঁদের কাজের প্রশংসা করেছেন অনেকে।
এমনকি এই নাটকে সেই একই টেপ রেকর্ডার ব্যবহার করা হয়েছে যা একসময় মাইকেল গ্যাম্বন এবং জন হার্ট-এর মতো খ্যাতিমান অভিনেতারা ব্যবহার করেছিলেন।
‘ক্র্যাপ’স লাস্ট টেপ’-এর মাধ্যমে দর্শক জীবনের গভীরতা এবং মানুষের একাকীত্ব সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে শুরু করে। গ্যারি ওল্ডম্যানের এই অসাধারণ অভিনয় দর্শকদের জন্য এক মূল্যবান অভিজ্ঞতা।
নাটকটি ১৭ই মে পর্যন্ত ইয়র্ক থিয়েটার রয়ালে প্রদর্শিত হবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান