মহাকাশ ভ্রমণের স্বপ্নদ্রষ্টা উইলি লের দেহাবশেষ: নিউইয়র্কের এক ভবনে আবিষ্কার, সমাধানে চাঁদের বাসনা।
বিজ্ঞান কল্পকাহিনী লেখক এবং মহাকাশ ভ্রমণের অন্যতম স্বপ্নদ্রষ্টা উইলি লে। তাঁর মৃত্যুর অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় পর, নিউইয়র্ক শহরের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের বেসমেন্টে পাওয়া গেল তাঁর দেহাবশেষ।
জার্মান-আমেরিকান এই লেখকের শেষ ইচ্ছা ছিল, মহাকাশে তাঁর স্থান হোক। আর সেই স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা চালাচ্ছেন ভবনটির বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক এবং বোর্ড প্রেসিডেন্ট।
উইলি লে ১৮৯৬ সালে জার্মানির বার্লিনে জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে তিনি আমেরিকায় পাড়ি জমান এবং সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করেন। ১৯৩০ এর দশকে তিনি মহাকাশ ভ্রমণ সম্পর্কে লেখালেখি শুরু করেন এবং তাঁর লেখনীর মাধ্যমে এই বিষয়ে মানুষের আগ্রহ বাড়াতে সহায়তা করেন।
রকেট ও মহাকাশ ভ্রমণের ধারণাকে জনপ্রিয় করতে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।
জানা যায়, ১৯৬৯ সালের ২৪শে জুন ৬২ বছর বয়সে উইলি লে-এর মৃত্যু হয়। তাঁর মৃত্যুর কয়েক সপ্তাহ পরেই মানুষ চাঁদে পাড়ি জমায়।
এই ঘটনাটি তাঁর অনুসারীদের জন্য ছিল অত্যন্ত বেদনাদায়ক। সম্প্রতি, নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের বেসমেন্টে উইলি লের দেহাবশেষ খুঁজে পাওয়া গেছে।
ভবনটির তত্ত্বাবধায়ক মাইকেল হার্ডলোভিক এই ক্যানটি খুঁজে পান, যেখানে ‘উইলি লের দেহাবশেষ’ লেখা ছিল।
এরপর ভবনটির কো-অপারেটিভ বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ডন নাদেউ এই বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেন।
তিনি জানান, “আমরা চেয়েছিলাম, তাঁর (উইলি লে) প্রতি সম্মান রেখে যেন সবকিছু করা হয়।” অনুসন্ধানে জানা যায়, উইলি লে-এর কোনো নিকটাত্মীয় নেই।
তাই তাঁর শেষকৃত্যের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব বর্তায় নাদেউ-এর উপর।
ডন নাদেউ জানান, উইলি লে-এর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে জানতে গিয়ে তিনি উপলব্ধি করেন, এই মানুষটি সবসময় চেয়েছিলেন মানুষ চাঁদে যাক। তাই তিনি চান, উইলি লের চিতাভস্ম যেন চাঁদে পাঠানো হয়।
তবে, বেসরকারি মহাকাশ ভ্রমণ সংস্থাগুলোর উচ্চমূল্যের কারণে এই কাজটি করা বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
একটি সংস্থার এই ধরনের কাজের জন্য প্রায় ১২,৫০০ মার্কিন ডলার (বর্তমান বিনিময় হারে বাংলাদেশি প্রায় ১৪ লক্ষ টাকার বেশি) খরচ হয়।
উইলি লের স্মৃতিকে সম্মান জানাতে ডন নাদেউয়ের এই প্রচেষ্টা নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। বর্তমানে উইলি লের দেহাবশেষ তত্ত্বাবধায়কের অফিসে রাখা আছে।
তিনি জানান, “আমি এই মানুষটির জীবন সম্পর্কে ভাবি। তিনি যা অর্জন করেছেন, তা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। আর এখন তিনি একটি ক্যানের মধ্যে এখানে আছেন।”
তথ্য সূত্র: পিপল