(নুরুজ্জামান খোকন)।
গত ৫ আগস্ট (সোমবার) ২০২৪, দুপুর ১২ ঘটিকায় ঢাকা উত্তর বাড্ডা থানা রোডে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অবস্থানকালে পিতা-পুত্রের গুলিবিদ্ধের ঘটনাটি ঘটে।
পিরোজপুর কাউখালী উপজেলার ৩ নং সদর ইউনিয়নের,কেউন্দিয়া গ্রামের মোঃ নেছার উদ্দিন(রিফাত) অনার্স পড়ুয়া তৃতীয় বর্ষ তেজগাঁও কলেজের ছাত্র, পিতা:-মোঃ খলিলুর রহমান এর পিতা:- মৃত:-বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ সাইদুল হক।
খলিলুর রহমান (অব:)সেনাবাহিনী একজন সদস্য, একমাত্র ছেলের ভবিষ্যত ও লেখাপড়ার জন্য বাবা-মা সহ ঢাকা উত্তর বাড্ডায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে হতো।
কোঠা বিরোধী আন্দোলনে ছেলে রিফাতকে সবসময়ই উৎসাহ দিতেন, তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হলেও কোঠায় বিশ্বাসী ছিলেন না, সন্তানের লেখাপড়া মেধা এবং যোগ্যতার প্রতি গুরুত্ব দিতেন, তাই চলমান প্রতিটি আন্দোলনে ছেলেকে উৎসাহ ও সহযোগিতা করতেন বাবা-মা।
খলিলুর রহমান বলেন, কোন রাজনীতি নয় আমার বাবা যেভাবে দেশকে স্বাধীন করেছে, যুদ্ধ করে জীবন দিয়েছে শুধুমাত্র বাংলার মাটি ও মানুষের জন্য। আমিও একজন সৈনিক হয়ে দেশ রক্ষায় ভূমিকা রেখেছি কোন কোঠা দিয়ে নয় মেধা ও যোগ্যতায় এবং দেশকে ভালোবেসে, তেমনি আমার সন্তান চলমান কোঠা বিরোধী আন্দোলনে তার যোগ্যতা ও মেধা অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে, সন্তানের সাথে আমিও পিতা হয়ে বসে থাকতে পারিনি, সন্তানের হাত ধরে পাশে থেকে সাহস এবং উৎসাহ যুগিয়েছি।
ঠিক সেদিন ৫ অক্টোবর দুপুরে, ফ্যাসিবাদী সরকারের সন্ত্রাসী গুন্ডা বাহিনী আন্দোলনরত ছাত্র জনতার উপর অমানবিক নির্যাতন এবং গুলি ছুঁড়লে, আমরা পিতা-পুত্র গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় ঢলে পড়ি,আমার শরীরে ১৯৩ টি সিসা গুলি বিদ্যমান থাকলেও আমি গর্বিত। পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল, কুর্মিটোলা সিএমএইচ, ইবনে সিনা এবং নাগরিক হসপিটাল থেকে চিকিৎসা নিলেও সকলগুলি উঠানো সম্ভব হয়নি,বর্তমানে এখন পর্যন্ত বুলেটের অসহ্য যন্ত্রণায় পিতা-পুত্রকে কাতরাতে হচ্ছে।
আহত রিফাত বলেন, আমার ২১টি সিসাগুলিবিদ্ধ শরীরে যন্ত্রণা নিয়ে কাতরাতে হচ্ছে। তবে ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা, ১৯৭১ যুদ্ধ দেখিনি,মেধার দাবিতে কোঠার বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে আমরা আবার এই বাংলাদেশকে পুনরায় স্বাধীন করতে পেরেছি। আমি গর্বিত বীর মুক্তিযোদ্ধার নাতি,একজন সৈনিকের সন্তান হয়ে। তিনি আরো বলেন, আমার সহকর্মী ছাত্র ভাই যারা শহীদ হয়েছেন তাদের শ্রদ্ধা জানাই। সেই সাথে আমাদের এই ত্যাগের বিনিময়ে মুছে গেছে বাংলাদেশের কলঙ্কময় অধ্যায়।