অস্ট্রেলিয়ায় এক ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
ফ্ল্যাটমেটকে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত এক ব্যক্তির বিচার চলছে, যিনি শুধু খুনই করেননি, বরং মৃতের পরিচয় ব্যবহার করে প্রায় ৬ লক্ষ মার্কিন ডলার হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
খবর অনুযায়ী, অভিযুক্তের নাম ইয়াং ঝাও (৩০)।
তিনি তার ফ্ল্যাটমেট কুইং ইয়ানকে (নাম পরিবর্তন) হত্যার দায় অস্বীকার করেছেন, তবে মরদেহ গুম করার কথা স্বীকার করেছেন।
২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ইয়ানকে হত্যার অভিযোগ ওঠে এবং ২০২১ সালের ১৯শে জুলাই হ্যামিলটনের একটি অ্যাপার্টমেন্টের বারান্দা থেকে একটি ‘বডি বক্সে’ তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
এই ঘটনার প্রায় ১০ মাস পর, ইয়ানের পরিচয় ব্যবহার করে ঝাও তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ২ লক্ষ ডলার নিজের অ্যাকাউন্টে সরিয়ে নেন।
এছাড়াও, তিনি ইয়ানের মায়ের কাছ থেকে ৪ লক্ষ ডলারেরও বেশি টাকা আত্মসাৎ করেন।
জানা যায়, ইয়ান চীনের নাগরিক ছিলেন এবং ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে তিনি নিখোঁজ হন।
এরপর জুলাই মাসে কুইন্সল্যান্ড পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।
ঘটনার সময় ঝাওয়ের বয়স ছিল ২৬ বছর।
তদন্তে জানা গেছে, ঝাও একসময় অস্ট্রেলিয়ায় ছাত্র ভিসায় ছিলেন, যা ২০২০ সালের এপ্রিলে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যায়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ক্রিস কুক আদালতকে জানিয়েছেন, ঝাও জুয়া খেলতে ভালোবাসতেন এবং এতে তিনি প্রচুর টাকা হারাতেন।
তিনি আরও বলেন, “টাকার জন্য খুন করা লাভজনক হতে পারে, যদি ধরা না পড়েন।
ইয়াং ঝাও ১০ মাস ধরে ঠিক সেটাই করেছেন।”
আদালতে দেওয়া তথ্যানুসারে, ঝাও ইয়ানের মাথায় আঘাত করে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।
এরপর তিনি তার মরদেহ একটি ‘টুলবক্স’-এ ভরে লুকিয়ে রাখেন।
ঝাও নিজেই পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন যে তিনি ইয়ানকে খুন করেছেন এবং টুলবক্সে লাশ লুকিয়ে রেখেছেন।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, ইয়ানের এক বন্ধু, যিনি সিডনিতে থাকতেন, ইয়ানের কাছ থেকে বেশ কয়েক মাস ধরে সন্দেহজনক বার্তা পাওয়ার পর নিখোঁজ ডায়েরি করেন।
আইনজীবী কুকের মতে, ইয়ান নিখোঁজ হওয়ার পর ঝাও আত্মরক্ষার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন, যার মূল কারণ ছিল তার স্বার্থপরতা ও ভীরুতা।
এই মামলার বিচার এখনো চলছে।
এই ঘটনার জেরে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
তথ্য সূত্র: পিপল