মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসন্ন মন্দার আশঙ্কা বাড়ছে, যা বিশ্ব অর্থনীতিকে নতুন সংকটের দিকে ঠেলে দিতে পারে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক জরিপে দেখা গেছে, দেশটির অর্ধেকের বেশি নাগরিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কিত।
এমন পরিস্থিতিতে, ভোক্তাদের মধ্যে কেনাকাটার প্রবণতা হ্রাস পাওয়ার ফলে মন্দা আরও ত্বরান্বিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হলো ভোক্তাদের ব্যয় করার ক্ষমতা। যদি মানুষজন তাদের অর্থ খরচ করা কমিয়ে দেয়, তাহলে ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ফলে, কোম্পানিগুলো কর্মী ছাঁটাই করতে বাধ্য হবে এবং নতুন নিয়োগ দেওয়া বন্ধ করে দেবে। এমন পরিস্থিতিতে মন্দা আরও গভীর হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাণিজ্য যুদ্ধ এবং শুল্ক বৃদ্ধি একটি বড় উদ্বেগের কারণ। এর ফলে অনেক ব্যবসার উৎপাদন খরচ বাড়ছে, যা তাদের মুনাফাকে কমিয়ে দিচ্ছে।
খেলনা প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলোর একটি জরিপে দেখা গেছে, শুল্কের কারণে অর্ধেকের বেশি ছোট ও মাঝারি আকারের খেলনা কোম্পানি কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে পারে।
অর্থনীতিবিদ ডেভিড কোটোকের মতে, এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে সরবরাহ শৃঙ্খলে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দেবে। জাহাজে পণ্য আটকা পড়া এবং কার্যাদেশ বাতিল হওয়ার মতো ঘটনাগুলো অর্থনীতির জন্য অশনি সংকেত।
ব্ল্যাকরকের প্রধান নির্বাহী ল্যারি ফিঙ্ক মনে করেন, অনেক ব্যবসায়ী নেতা এরই মধ্যে আশঙ্কা করছেন যে মার্কিন অর্থনীতি সম্ভবত মন্দার দিকে যাচ্ছে।
তবে, পরিস্থিতি এখনো পুরোপুরি খারাপের দিকে যায়নি। কিছু অর্থনীতিবিদ মনে করেন, ভোক্তাদের মধ্যে এখনো ব্যয়ের প্রবণতা খুব একটা কমেনি।
এছাড়া, শেয়ার বাজারেও কিছুটা স্থিতিশীলতা দেখা যাচ্ছে। যদিও, বাণিজ্য নীতির পরিবর্তন এবং শুল্কের কারণে সৃষ্ট অনিশ্চয়তা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আসন্ন মন্দা ঠেকাতে হলে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। বাণিজ্য যুদ্ধের অবসান এবং স্থিতিশীল নীতি গ্রহণ করা না হলে, অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হয়ে পড়বে।
এটি শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্যই নয়, বিশ্ব অর্থনীতির জন্যও একটি উদ্বেগের বিষয়। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক দুর্বলতা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি কমে যেতে পারে, যা দেশের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন