স্পেন ও পর্তুগালে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাটের পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে জনজীবন। ইউরোপের ইতিহাসে সাম্প্রতিককালের মধ্যে সবচেয়ে বড় এই ব্ল্যাকআউটের কারণ অনুসন্ধানে নেমেছেন বিশেষজ্ঞরা। সোমবার দুপুরে এই বিভ্রাটের ফলে শহরগুলোতে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার, যার জেরে হাজার হাজার মানুষ আটকা পড়েন ট্রেনগুলোতে।
মঙ্গলবার সকাল নাগাদ স্পেনের প্রায় সব সাবস্টেশন চালু হয়েছে এবং দেশটির ৯৯.৯৫ শতাংশ বিদ্যুত সরবরাহ পুনরুদ্ধার করা গেছে। প্রতিবেশী দেশ পর্তুগালের বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থার এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, তাদের সব সাবস্টেশন পুরোপুরি কাজ করছে এবং জাতীয় গ্রিড স্থিতিশীল হয়েছে।
সোমবার রাতে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ জানান, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে পুনরুদ্ধারের জন্য এবং ব্ল্যাকআউটের কারণ অনুসন্ধানে বিশেষজ্ঞরা কাজ করছেন। তিনি বলেন, “এমন ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। হঠাৎ করে কেন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেল, তা এখনো পর্যন্ত বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করতে পারেননি। তবে তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। সম্ভাব্য সব কারণ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে এবং কোনো সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না।”
প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, সোমবার দুপুর ১টা ৩৩ মিনিটে এই বিভ্রাট শুরু হয়, যখন মাত্র পাঁচ সেকেন্ডের জন্য উৎপাদিত ১৫ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়, যা সে সময় ব্যবহৃত মোট বিদ্যুতের ৬০ শতাংশের সমান।
বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ। ট্রেন ও মেট্রো পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হাজার হাজার যাত্রী বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়েন। মাদ্রিদের আতোচা রেলস্টেশন পরিণত হয় অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে। সেখানে খাবার ও পানীয়ের অভাবে অনেককে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অনেকে খোলা আকাশের নিচে, এমনকি কার্ডবোর্ডের ওপর রাত কাটাতে বাধ্য হন।
মঙ্গলবার সকালে মাদ্রিদের মেট্রো পরিষেবা প্রায় স্বাভাবিক হয়ে আসে। তবে কিছু লোকাল ট্রেন এখনো বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া, বিমানবন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম চললেও, যাত্রীদের বিমান সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে ফ্লাইট সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, এই ঘটনার জেরে জরুরি পরিষেবা এবং সাধারণ মানুষের জীবনে নেমে আসে চরম বিপর্যয়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে এবং খুব দ্রুতই এর কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম