অভিনেত্রী অলিভিয়া মুনের জীবন: মাতৃত্বের চ্যালেঞ্জ আর ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই।
মা হওয়া সহজ নয়, বিশেষ করে যখন আপনার সন্তান জনসমক্ষে বায়না ধরে! সম্প্রতি, অভিনেত্রী অলিভিয়া মুন তার সামাজিক মাধ্যমে এমনই এক অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন।
নিউইয়র্কের রাস্তায় জুতো ছাড়াই ছেলের হাঁটার ছবি পোস্ট করে তিনি যেন ঝড় তুলেছেন নেটিজেনদের মনে। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। একইসাথে, স্তন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে তার লড়াই এবং ক্যান্সার গবেষণার প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছেন।
গত কয়েক দিন আগে, অলিভিয়া তার তিন বছর বয়সী ছেলে ম্যালকমকে নিয়ে বাইরে বেরিয়েছিলেন। হঠাৎ করেই রাস্তায় বায়না ধরে সে, জুতো পরতে রাজি নয়।
শেষে, বাধ্য হয়ে মোজা পরেই ছেলেকে নিয়ে প্রায় এক মাইল পথ হেঁটে বাড়ি ফিরতে হয় তাকে। এই ঘটনার ছবি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করার পর, অন্যান্য অভিভাবকদের কাছ থেকে প্রচুর সমর্থন ও সহানুভূতি পেয়েছেন অলিভিয়া। অনেকেই তাদের সন্তানের একই ধরনের কাণ্ডকারখানার কথা জানিয়েছেন, যা প্রমাণ করে, মাতৃত্বের পথে এমন অভিজ্ঞতা খুবই স্বাভাবিক।
লস অ্যাঞ্জেলেসে “উইমেন’স ক্যান্সার রিসার্চ ফান্ড” এর এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে অলিভিয়া তার জীবনের এই কঠিন সময়ের কথা জানান।
তিনি বলেন, “আমি যখন বাড়ি ফিরলাম, আমার ছেলে উঠোনে খেলছিল। আমি তাকে জড়িয়ে ধরলাম, আর সে বলল, ‘মা, অনেক হয়েছে’। এরপর আমি জন (মুনির স্বামী) এর দিকে তাকালাম। সেই মুহূর্তেই আমরা ঠিক করলাম, কীভাবে এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।”
২০২৩ সালে অলিভিয়া জানতে পারেন যে তিনি স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত। পরীক্ষার পর জানা যায়, তার “লুমিনাল বি” নামক দ্রুত বর্ধনশীল ক্যান্সার হয়েছে।
অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমেই রোগটি ধরা পড়েছিল। চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আমি চাই না কেউ এই পরিস্থিতির মধ্যে পড়ুক, কিন্তু যদি কারো ক্যান্সার হয়, তবে আমি প্রার্থনা করি, তারা যেন আমার মতো ভালো ডাক্তার ও নার্সদের পান।”
ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গবেষণা ও সচেতনতার গুরুত্ব তুলে ধরে অলিভিয়া বলেন, “আমার ক্যান্সার একটি আক্রমণাত্মক এবং দ্রুত ছড়ানো ক্যান্সার। তবে গত ২০ বছরে এন্ডোক্রাইন থেরাপির মাধ্যমে এই ধরনের ক্যান্সার নিরাময় সম্ভব হয়েছে।
আর এটি সম্ভব হয়েছে গবেষণার জন্য অর্থায়নের ফলে। তাই স্তন ক্যান্সার গবেষণায় আরও বেশি অর্থায়ন হলে, আমরা আরও অনেক নিরাময় খুঁজে পাবো এবং অন্যদের জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে।”
অলিভিয়ার এই অভিজ্ঞতা আমাদের সমাজে মায়েদের প্রতি আরও সহানুভূতিশীল হতে এবং ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়াতে উৎসাহিত করে। স্তন ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা এবং এর প্রাথমিক সনাক্তকরণ জীবন বাঁচাতে পারে।
আসুন, আমরা সবাই ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সচেতন হই এবং সমর্থন যোগাই।
তথ্য সূত্র: পিপল