বিখ্যাত আমেরিকান ফুটবল খেলোয়াড় অ্যালেক্স স্মিথ, যিনি একসময় মাঠ কাঁপিয়েছেন, খেলা থেকে অবসর নেওয়ার পর এখন অন্য এক কঠিন লড়াইয়ের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন – শরীরের যন্ত্রণা মোকাবেলা করা।
মারাত্মক এক আঘাতের কারণে জীবনের ঝুঁকি পর্যন্ত তৈরি হয়েছিল তার, পেরিয়েছেন ১৭টি অস্ত্রোপচার। সেই কঠিন অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে, এখন তিনি অন্যদেরকে এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করতে চান।
২০১৮ সালে, একটি খেলার সময় পায়ে গুরুতর আঘাত পান স্মিথ। হাড় ভেঙে যাওয়া থেকে শুরু করে শরীরে পচন ধরা— একে একে অনেকগুলো জটিলতা দেখা দেয়।
জীবন বাঁচানোর জন্য দ্রুত অস্ত্রোপচার করতে হয়, কিন্তু এরপরও দীর্ঘ সময় ধরে হাসপাতালে থাকতে হয়েছে তাকে। এই সময়টাতে তিনি শারীরিক যন্ত্রণার পাশাপাশি মানসিক দিক থেকেও বিপর্যস্ত ছিলেন।
চিকিৎসার দীর্ঘ এই সময়ে তিনি গভীরভাবে উপলব্ধি করেন, ব্যথার সঙ্গে লড়াই করা কতটা কঠিন। শুধু শারীরিক কষ্টই নয়, একজন মানুষ যখন তীব্র যন্ত্রণায় কাতর হন, তখন তার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়, প্রিয়জনদের সঙ্গে সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
খেলাধুলা থেকে দূরে থাকতে হওয়ায় তার মানসিক অবস্থাও দুর্বল হয়ে পড়েছিল।
এই কঠিন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য তিনি ওষুধ এবং চিকিৎসার ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। তবে এই বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করার সুযোগ ছিল না।
সমাজের চোখে এটি যেন একটি ‘নিষিদ্ধ’ বিষয় ছিল। কিন্তু স্মিথ মনে করেন, এই বিষয়ে কথা বলাটা জরুরি, কারণ, ব্যথার সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে অনেক সময় মানুষ আরও বেশি সমস্যায় পড়ে।
বর্তমানে, ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ভারটেক্স ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে যুক্ত হয়ে স্মিথ একটি বিশেষ প্রচারাভিযান শুরু করেছেন।
এই প্রচারণার মূল উদ্দেশ্য হলো, মানুষকে তাদের শারীরিক যন্ত্রণা নিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করতে উৎসাহিত করা। কারণ, সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এই ধরনের কষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
আর্টিকেলটিতে স্মিথ তার অতীতের কথা উল্লেখ করে বলেন, “ব্যথা আমার জন্য দীর্ঘকাল ধরে একটি বড় সমস্যা ছিল এবং এটি আমাকে অনেক প্রভাবিত করেছে।
আমি অনেক দিন ধরে খুব হতাশ ছিলাম। যখন আপনি তীব্র ব্যথা অনুভব করেন, তখন অন্য কিছু ভাবা কঠিন হয়ে পড়ে।
কিভাবে এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়? কিভাবে একজন ভালো বাবা হওয়া যায়, অথবা একজন ভালো স্বামী হওয়া যায় যখন আপনি এইসব সমস্যার সঙ্গে লড়াই করছেন? এটি সবকিছুকে প্রভাবিত করে।”
স্মিথের এই অভিজ্ঞতা আমাদের সবার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা নিয়ে আসে। শারীরিক যন্ত্রণা একটি সাধারণ বিষয়, এবং এর থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
আমাদের সমাজে এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো দরকার, যাতে মানুষ সহজে তাদের কষ্টগুলো প্রকাশ করতে পারে এবং উপযুক্ত চিকিৎসা পেতে পারে।
তথ্য সূত্র: পিপল